পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: তিস্তা নদীতে (Teesta River) বর্তমানে সার্চিং অপারেশন (Searching Operation) চলছে না। কিন্তু এখনই নদীতে নামার ক্ষেত্রে গ্রিন সিগন্যাল দেয়নি পুলিশ। অক্টোবরে সিকিমের লোনাক লেক বিপর্যয়ের পর তিস্তা দিয়ে সিকিম সেনাবাহিনীর সামরিক সরঞ্জাম ভেসে আসে। তিন মাস পার হতে চললেও সব সামরিক সরঞ্জাম এখনও উদ্ধার হয়নি।
সেনাবাহিনী ও জেলা পুলিশের আশঙ্কা, এখনও প্রচুর সামরিক সরঞ্জাম নদীবক্ষের নীচে চাপা পড়ে আছে। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘সিকিম সেনার ভেসে আসা সামরিক সরঞ্জামের পরিমাণ নিয়ে আমাদের কাছে কোনও সঠিক তথ্য নেই। তবে সেনাবাহিনী এখনও সার্চিং অপারেশন চালাতে চায়।’ সামনের বর্ষা বিদায় না নেওয়া পর্যন্ত তিস্তা নদীকে ‘নিরাপদ’ বলতে চাইছে না পুলিশ। সরানো হয়নি তিস্তার পাড়ে সেবক থেকে মেখলিগঞ্জ পর্যন্ত পুলিশের সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড।
এখন নদীতে বেশি জল নেই। এই শুখা মরশুমে কালিঝোরা ও গজলডোবা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হলে অবশ্য ফের সার্চিং অপারেশন চালাবে সেনা ও পুলিশ।
গতবছর ৪ অক্টোবর লোনাক বিপর্যয়ের পর লেকের জল সমতলে নেমে আসে। প্রচুর প্রাণহানি ও সম্পত্তি নষ্ট হয়েছিল। সিকিম সেনার একটি ক্যাম্প (Camp) জলের তোড়ে পুরো ভেসে যায়। তখনই সামরিক সরঞ্জাম ভেসে আসে তিস্তায়। জেলার ক্রান্তির চাঁপাডাঙ্গায় নদী থেকে সংগ্রহ করা মর্টার শেল বাড়িতে এনে ভাঙতে গিয়ে এক কিশোরের মৃত্যু হয়। এরকম ঘটনা রুখতে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসজুড়ে সেনা ও পুলিশ যৌথভাবে সার্চিং অপারেশন চালায় তিস্তায়। অনেক সামরিক সরঞ্জাম নিষ্ক্রিয় করা হয়।
কয়েকদিন আগে কালিঝোরা থেকে কিছুটা জল ছাড়ার পর সার্চিং অপারেশন চালানোর পরেও কিছু মেলেনি। তারপরেও তিস্তা নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না জেলা পুলিশ। খান্ডবাহালে বলেন, ‘এখন নদীতে ভারী কিছুর চাপ পড়লে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সেজন্য নদীতে নামা, চাষাবাদে ট্র্যাক্টর ব্যবহার, কাঠ সংগ্রহের উপর সতর্কতা জারি করা হয়েছে।’
সেচ দপ্তরের উত্তর-পূর্ব বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (Chief Engineer) কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক জানান, পাহাড় থেকে কোনও কারণে জল ছাড়লে সেনা ও পুলিশকে জানানো হচ্ছে।