উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। বৃহস্পতিবার নিবার্চন কমিশনের অফিসে গেলেন বিধায়ক। যে সব প্রার্থীরা আইএসএফের হয়ে মনোনয়ন জমা করতে পারেননি, প্রয়োজনে তাঁদের সকলকে নিয়ে আসবেন নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে। প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা করার ব্যবস্থা করার দাবিতে প্রয়োজনে কমিশনের সামনে ধর্না অবস্থানে বসার হুঁশিয়ারি দিলেন নওশাদ। এদিন আইএসএফ বিধায়ক পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ভাঙড়ের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। বিরোধীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আদালতের নির্দেশ মানা হচ্ছে না।’ পাশাপাশি এই মৃত্যুর দায় কার, প্রশ্ন তোলেন নওশাদ। প্রতিবাদে নির্বাচন কমিশনের অফিসের সামনে বামেদের বিক্ষোভ চলছে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভাঙড়ের পরিস্থিতি গুরুতর বলে দাবি করেছেন খোদ এসপি।
এদিকে নিয়ম ভেঙে আইএসএফের মনোনয়ন নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ভাঙড়-২-এর বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায়। সময় পার হয়ে গেলেও চলছে মনোনয়ন জমা নেওয়া। প্রসঙ্গত, মনোনয়নের শেষদিনেও উত্তপ্ত রয়েছে ভাঙড়। ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ এক আইএসএফ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়েছে ভাঙড় ২ বিডিও অফিসের বাইরে। এদিন সকাল থেকে উত্তপ্ত রয়েছে ভাঙড়। সকালে সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মনোনয়ন কেন্দ্রে যাওয়ার পথে সিপিএমের কর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। দিনভর দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়।
বেলা গড়িয়ে মনোনয়ন পর্ব শেষ হলেও অশান্ত রয়েছে ভাঙড় ২ নম্বর ব্লক অফিস সংলগ্ন এলাকা। যথেচ্ছ বোমা পড়তে থাকে। বোমা, গুলি ছোড়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আইএসএফ নেতৃত্বের। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গুলিতে গুরুতর জখম এক আইএসএফ কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষ রক্ষা হল না। বাজারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও আক্রান্ত হন। উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে থাকে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কমব্যাট ফোর্স নামানো হয়। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের কর্মীদের লক্ষ্য করে আইএসএফ বোমাবাজি করেছে বলে তৃণমূলের পালটা অভিযোগ।
মনোনয়নকে ঘিরে গত দু’দিন ধরে উত্তপ্ত রয়েছে ভাঙড়। ১৪৪ ধারাকে উপেক্ষা করে চলছে জমায়েত। বোমাবাজি, গুলি কার্যত রণক্ষেত্র চেহারা নিয়েছে এলাকা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত দোকানপাট। গতকালও বিডিও অফিসের সামনে প্রচুর তৃণমূল কর্মী-সমর্থক জড়ো হন বলে অভিযোগ। বোমার আওয়াজে কেঁপে ওঠে এলাকা।