উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে বেলাগাম সন্ত্রাস দেখল বাংলা। বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট, প্রাণহানী, বোমাবাজি, গোলাগুলি কিছুই বাদ গেলনা ভোটগ্রহণে। এই সন্ত্রাসের জন্য কমিশনকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ মানতে নারাজ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন সন্ত্রাসের দায় কমিশনের নয়।
শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। রাজীব সিনহা বলেন, ‘সন্ত্রাসের দায় কমিশনের নয়। কমিশনের কাজ সমস্ত ব্যবস্থা করা। আমরা স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করে সেখানে প্রয়োজনীয় বাহিনী পাঠিয়ে দিয়েছি। এবার প্রশাসন সেটাকে কী ভাবে ব্যবহার করবে সেটা তাদের ব্যাপার। কে কোথায় কাকে খুন করে দেবে তার দায় কমিশনের হতে পারে না।’
রাজ্যজুড়ে এদিন এখনও পর্যন্ত ভোটগ্রহণ সংক্রান্ত হিংসায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ জানিয়েছেন, ভোটের দিন রাজ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। অশান্তির দায়িত্ব তিনি ঠেলেছেন রাজ্য পুলিশের দিকে। স্পষ্টই জানিয়েছেন, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা রাজ্য পুলিশের বিষয়। নির্বাচন কমিশনের কাজ ‘ব্যবস্থাপনা’। তিনি বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রাজ্য পুলিশের বিষয়। আমাদের কাজ ব্যবস্থাপনা। কেউ গ্যারান্টি দিতে পারবে না, কে কাকে গুলি করে মেরে দেবে। কিন্তু ব্যবস্থার দিক থেকে বলতে পারি, আমরা সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি, যাতে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন। এটা তো অপরাধ। অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করবে, তদন্ত করবে। আশা করি, পুলিশ তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করবে।’’
যদিও ভোটে অশান্তির কথা পুরোপুরি মানতে চাননি রাজীব। তিনি বলেন, ‘‘পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট না এলে ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে, নাকি অশান্তিতে হচ্ছে, দু’টোই বলা সম্ভব না। সব কিছু শান্তিপূর্ণ হয়েছে এটাও বলা যাবে না, অশান্তি হয়েছে তা-ও বলা যাবে না। যত ক্ষণ ভোট না মিটছে, তিনি কিছু বলতে পারছেন না বলেই জানিয়েছেন।’ তাঁর কথায়, ‘‘তিন-চারটে জেলায় বেশি অশান্তি হয়েছে। দুই ২৪ পরগনা, কোচবিহারে শুধু দিনহাটা, মুর্শিদাবাদে কিছু অশান্তি হয়েছে। আমি এ সব দাবি করছি না। যা অভিযোগ এসেছে, ডিএম, এসপিদের বলা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশও যাচ্ছে। যাতে সকলে ভাল করে ভোট দিতে পারেন, সেটাই উদ্দেশ্য।’’
উল্লেখ্য, শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণে সকাল থেকে শুরু হয় ব্যাপক হিংসা। রাজ্যজুড়ে এখনও পর্যন্ত ভোটগ্রহণ সংক্রান্ত হিংসায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোথাও দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এমনকী বহু জায়গায় রাজ্য পুলিশের নাকের ডগায় হিংসা হলেও তারা নির্লিপ্ত ছিল বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে দুষছে বিজেপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।