উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শুক্রবার সন্ধ্যায় ওডিশার বালেশ্বরের কাছে ভয়বহ দুর্ঘটনায় বেড়েই চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৮। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল, ভারতীয় সেনা। এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে দুর্ঘটনার বীভৎসতা। ট্রেনের কামরা একটার গায়ে একটা উঠে পড়েছে। কামরাগুলো ভেঙেচুরে একাকার। লোহার বড় বড় পাত ফুঁড়ে গিয়েছে শরীর। ট্রেনের চাকা উপরে, আর লোহার পাতের নীচে চাপা পড়ে শরীরের স্তূপ। রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত। কোথাও সিমেন্টের স্লিপার, লোহার রড ফুঁড়ে বেরিয়ে রয়েছে হাত, কোথাও মুখ, কোথাও পায়ের পাতাটুকো। তিনটে ট্রেনের একেবারে কঙ্কালসার অবস্থা। আর তারই ফাঁকে ফাঁকে আটকে দলা পাকানো মাংসপিণ্ড।
বালেশ্বরের আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহতদের যাত্রীদের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রেলপুলিশ, এনডিআরএফ, বায়ু সেনা কর্মীরা। চাদরে মুড়িয়ে দেহগুলিকে কোনওক্রমে বার করে জড়ো করা হচ্ছে এক জায়গায়। একটা ম্যাটাডোরে সেই দেহ রাখা হচ্ছে। আশপাশ থেকে জড়ো হচ্ছে আরও বেশ কিছু দেহ। একসঙ্গে ৩০-৪০টা দেহ একের পর এক ফেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঠান্ডা ঘরে! শববাহী যান যাতে আনা হয়, তার ব্যবস্থা চলছে। চতুর্দিকে শুধুই অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেনের আওয়াজ, দলা পাকানো দেহ, সাদা কাপড়ে মোড়া দেহ, কান্নার আওয়াজ। উদ্ধারকারীরা এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দেহগুলিকে ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে কোনওক্রমে টেনে হিঁচড়ে বার করে আনার। কয়েক টন ওজনের লোহার বড় বড় বগিগুলো রীতিমতো জট পাকিয়ে গিয়েছে। আর তার মাঝে শরীরগুলো গিয়েছে থেঁতলে।
এরমধ্যেই দুর্ঘটনায় মৃত যাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, “যেভাবে দেহগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যেন মনে হচ্ছে কোনও ময়লার গাড়িতে স্তূপ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মৃতদেহগুলিকে যদি একটু সসম্মানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকত, তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন নিহতের পরিজনরা। যদি আরও বেশি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা সম্ভব হত, তাহলে বোধহত ভাল হত।” অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে, তবে মূলত সেগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে আহত যাত্রীদের হাসপাতালে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে।