বর্ধমান: বাস মালিক বা কর্মীরা কোনও দাবিদাওয়া নিয়ে ধর্মঘট ডাকেননি। তবুও বৃহস্পতিবার যাত্রীবাহী বাসের আকাল দেখা গেল বর্ধমানে। ঘন্টার পর ঘন্টা বাসের জন্য বাসস্ট্যান্ডে পথ চেয়ে বসে থাকলেন যাত্রীরা। তাঁরা জানান, তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির জন্য কার্যত বাসশূন্য বাসস্ট্যান্ড। ফলে দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে তাঁদের। শুক্রবার দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে জানান যাত্রীরা।
বর্ধমান শহরের দু’প্রান্তে রয়েছে দু’টি বাস টার্মিনাস। শহরের উত্তর উপকন্ঠে রয়েছে ‘উত্তরা’ আর দক্ষিণে আছে ‘পূর্বাশা’ বাসস্ট্যান্ড। প্রতিদিন দু’টি বাস টার্মিনাস থেকে বিভিন্ন রুটে কয়েক হাজার বাস চলাচল করে। কিন্তু বুধবার থেকে দুটি বাসস্ট্যাণ্ডে বাসের সংখ্যা কমতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার দুটি বাসস্ট্যান্ডই কার্যত বাসশূন্য হয়ে পড়ে।
বর্ধমান জেলা বাস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনিবার্হী কমিটির সদস্য শান্তনু গুপ্ত বলেন, ‘১৭ জুলাই থেকেই বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন রুটে। ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির জন্য এই পরিস্থিতি। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের সমস্যা হচ্ছে, তেমনি বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবহণ কর্মীরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা প্রতিবছরই বাস কর্মসূচির জন্য দিয়ে থাকি। এবছরও দেব। কিন্তু দলের নেতাদের উচিৎ আগে থেকে এভাবে বাস আটকে রাখা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।’
বর্ধমানের আলিশায় পূর্বাশা বাস টার্মিনাস থেকে হুগলির আরামবাগ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর জেলার বাস চলাচল করে। এছাড়া দক্ষিণ দামোদর এলাকার বাস চলাচল করে পূর্বাশা বাস টার্মিনাস থেকে। প্রতিদিন প্রচুর বাস যেমন স্ট্যান্ডে ঢোকে, তেমনি বের হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার চিত্রটা ছিল উলটো। যাত্রী আছে কিন্তু বাস নেই। যাত্রীরা বাসের জন্য দিনভর পথ চেয়ে বসে আছেন। তবুও বাসের দেখা পাননি তাঁরা। একই ছবি বর্ধমানের উত্তরা বাস টার্মিনাসে। এই দুই বাসস্ট্যান্ড থেকে বোলপুর, সিউড়ি, গুসকরা, কাটোয়া, কালনা, মুর্শিদাবাদ, নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, দুর্গাপুর, আসানসোল রুটে বাস চলাচল করে।
বাসের আকালের জন্য বিরোধীরা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। জেলার কংগ্রেস নেতা গৌরব সমার্দার বলেন, ‘এসব নিয়ে দিদিমণির কোনও মাথা ব্যাথা নেই।’ কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বর্ধমান সদর জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ বাস না পেয়ে সমস্যায় পড়ছেন। অথচ প্রশাসন উদাসীন।’ পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার বক্তব্য, ‘১৭ জুলাই আমাদের দলীয় বৈঠকে ঠিক হয়, কোনওভাবেই আগে থেকে বাস আটকে রাখা যাবে না।’ তাঁর কাছে বাস বন্ধের খবর নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।