হ্যামিল্টনগঞ্জ: শেষ পর্যন্ত নির্দল প্রার্থীকে দলে টেনেই আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের লতাবাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের দখল নিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার ওই গ্ৰাম পঞ্চায়েতে বোর্ড দখল করতে না পারায় বিরোধী পদ্ম শিবির দূষছে কালচিনি ব্লক প্রশাসনকে। বিজেপির অভিযোগ, ব্লক প্রশাসন বোর্ড গঠনের সময় বিরোধী দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের কোন কথা না শুনে একতরফা ভাবে তৃণমূলের প্রধানের নাম ঘোষণা করে চলে যায়। এমনকি উপপ্রধানের নাম প্রস্তাবই করা হয়নি বলে অভিযোগ বিজেপির কালচিনির আহ্বায়ক তথা লতাবাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য অলোক মিত্রের। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ভাবে লতাবাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করা হল। আমাদের ভোটাভুটির প্রস্তাবে কর্ণপাত করেননি কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন।’ তাঁর দাবি, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আইনের দ্বারস্থ হবেন। তিনি বলেন ‘ভোটাভুটির সুযোগ পেলে ওই পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করত বিজেপি। যদিও কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন বিরোধী দলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত আইন মেনে বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’ তৃণমূলের কালচিনি ব্লক সভাপতি বীরেন্দ্র বরা ওরাওঁ বলেন, ‘গত ১৪ আগস্ট লতাবাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হওয়ার কথা ছিল। বিজেপি ভীতি প্রদর্শন করে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যকে নিজেদের দলে টেনে নিয়ে বোর্ড গঠন আটকে দেয়। তৃণমূল প্রতিটি গ্ৰাম পঞ্চায়েতে গণতান্ত্রিক ভাবেই বোর্ড গঠন করেছে। ’
উল্লেখ্য, ২৫ সদস্যের লতাবাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল পায় ১৩ টি আসন। বিজেপির দখলে যায় ১১ টি আসন। একজন নির্দল প্রার্থী ভোটে জয়ী হন। তৃণমূল ছেড়ে এক পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপিতে যাওয়ায় দুই দলের সদস্য সংখ্যা ১২ তে পৌঁছয়। দু ’দিন আগেই নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য গোপা বসু তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় লতাবাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েত শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের দখলে গেল। ওই গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন ধীরেন বাগওয়ার ও উপপ্রধান হয়েছেন মৌসুমী দাস।
এদিন ঝামেলা এড়াতে কালচিনি ও জয়গাঁ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নামানো হয় র্যাফ। গ্ৰাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে হ্যামিল্টনগঞ্জ- আলিপুরদুয়ার রাজ্য সড়কে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। যদিও বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া চলাকালীন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে কয়েকশো তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক গ্ৰাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়ে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। সেখানে অবশ্য আগের দিনের মতো কোন বিজেপি সমর্থক আসেননি। পরবর্তীতে বিডিও প্রশান্ত বর্মন পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে বের হয়ে তৃণমূল সমর্থকদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন।