প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: রেলের (Rail) আন্ডারপাস তৈরির কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল তৃণমূলের (Trinamool) এক পঞ্চায়েত সদস্যকে। মাঝেরডাবরি গ্রাম পঞ্চায়েতের হলদিবাড়ি রোড এলাকার ঘটনা। মনোজিৎ বর্মন নামে ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে সোমবার গ্রেপ্তার করেন আলিপুরদুয়ার জংশনের আরপিএফ (RPF) কর্মীরা। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব আবার এর পিছনে রাজনীতি দেখছে। তারা তো এর প্রতিবাদে আন্দোলনের ডাকও দিয়ে ফেলেছে।
আলিপুরদুয়ার জংশন আরপিএফ ইনস্পেকটর অরুণকুমার সিংহ বলেন, ‘বর্ষার আগেই ওই জায়গায় আন্ডারপাস তৈরির টার্গেট রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি দলবল নিয়ে জোর করে কাজে বাধা দিচ্ছেন। একদিন তো কাজ বন্ধই করে দেন। রেলের জায়গার মাটি কাটাতে গেলে রেলের কাছ থেকে রয়্যালটি চাইছেন। তারপরেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার (Arrest) করা হয়েছে।’
মাঝেরডাবরি গ্রাম পঞ্চায়েত হলদিবাড়ি রোড এলাকায় এসকে ১১১ লেভেল ক্রসিং এলাকায় আন্ডারপাস তৈরির কাজ শুরু করেছে রেল। সেই কাজেই বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ধৃতের বিরুদ্ধে। সোমবার নতুন আন্ডারপাস তৈরির জায়গায় মাটির প্রয়োজন দেখা দেয়। সেই মাটি ফেলতেও বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এতে আন্ডারপাস তৈরির কাজ থমকে যায়। এদিকে বর্ষাকাল শুরু হওয়ার আগেই আন্ডারপাস তৈরির কাজ শেষ করতে চাইছে রেল। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর হস্তক্ষেপে সেই কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।
আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশন থেকে শামুকতলা রোড স্টেশন পর্যন্ত রেললাইন চলে গিয়েছে। একইরকমভাবে নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন থেকে শামুকতলা রোড পর্যন্ত আরেকটি সমান্তরাল রেললাইন রয়েছে। দুই রেললাইনের মাঝে প্রায় ৫০ মিটার ফাঁকা জায়গা রয়েছে। ওই কাজের জন্য সেখান থেকে মাটি নেওয়া হচ্ছিল। তখনই ওই পঞ্চায়েত সদস্য বাধা দেন বলে অভিযোগ। তিনি জনাকয়েক সদস্যকে নিয়ে এসে রয়্যালটি দাবি করেন বলে জানা গিয়েছে। খবর যায় আরপিএফের কাছে। সোমবার বিকেল নাগাদ পঞ্চায়েত সদস্য মনোজিতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, রাস্তা বেহাল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য। তখনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দাবি করেন আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল যুবর সহ সভাপতি মানস রায়। তিনি বলেন, ‘রেল যেভাবে মাটি নিয়ে যাচ্ছে তাতে এলাকার রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ছে। সেই কথা বলতে গেলেই তাঁকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করে আরপিএফ।’ তাঁর আরও দাবি, তৃণমূল কর্মী বলেই তাঁকে হেনস্তা করতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাস অবশ্য প্রশাসনিক বিষয় বলে এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন। তবে তাঁর কথায়, ‘কেউ আইন লঙ্ঘন করলে প্রশাসনের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়াটাই স্বাভাবিক।’