উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দিল্লি কর্মসূচির জন্য সংরক্ষিত ট্রেন পেল না তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি শেষ মুহূর্তে রেল জানিয়েছে কোচের অভাবে ট্রেন দেওয়া সম্ভব নয়। ট্রেন বাতিল হলেও যেকোনও পরিস্থিতিতে প্রাপ্য আদায়ে দিল্লি কর্মসূচী বাতিল হবে না বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেন, “তৃণমূলকে এ ভাবে রুখে দেওয়া যাবে না। ট্রেন বাতিল করে আমাদের আটকানো যাবে না। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করে নেব। বাংলার বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর দিল্লিতে পৌঁছবেই।’’
শুক্রবার সন্ধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই দিল্লি যাওয়ার জন্য জমায়েত হয়েছে প্রচুর সংখ্যক জব কার্ড হোল্ডাররা। তাঁদের নিয়েই দিল্লিতে ১০০ দিনের প্রাপ্য বকেয়া আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূলের। একুশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই কর্মসূচী ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় আড়াই হাজার লোককে নিয়ে গিয়ে ধর্ণার পরিকল্পনা ছিল অভিষেকের। সেকারণেই আগে থেকেই পূর্ব রেলের কাছে একটি ট্রেন ভাড়া করেছিল তৃণমূল। শুক্রবার বিকেলে জানা যায় সেই ট্রেন বাতিল হয়েছে পর্যাপ্ত রেক না থাকার কারণে। যদিও রেলকর্তাদের একাংশের দাবি ট্রেন সংরক্ষনের জন্য আবেদনই করেনি তৃণমূল।
এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রেলের ইমেল দেখিয়ে বললেন, ট্রেন সংরক্ষনের জন্য আগাম টাকা জমা নিয়েও শেষ মুহূর্তে ট্রেন দেবে না বলে জানিয়েছে রেল। তবে তৃণমূলকে এ ভাবে রুখে দেওয়া যাবে না। অভিষেক বলেন, ‘‘প্রতিহিংসা পরায়ণ নরেন্দ্র মোদি সরকার বাংলার বঞ্চিত এবং গরীব মানুষদের দিল্লি যেতে দিতে চায় না। সে জন্যই রেল অনুমোদন ওই ট্রেনের অনুমোদন দেয়নি।’’ একই সঙ্গে অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, ‘‘রেল যদি অনুমোদন না-ই দেবে, তবে গত ২৩ সেপ্টেম্বর আবেদন জমা দেওয়ার পর সিকিওরিটি ডিপোজিট হিসাবে টাকা জমা নিয়েছিল কেন?’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, আইআরসিটিসির মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা ভাড়া এবং ১১ লাখ টাকা সিকিওরিটি ডিপোজিট দিয়ে বিশেষ ট্রেনের আবেদন করা হয়েছিল গত ২৩ সেপ্টেম্বর। প্যান্ট্রি-সহ ট্রেনে থাকার কথা ছিল ২০টি স্লিপার বগি। এদিন সন্ধ্যায় জানা যায়, পূর্ব রেল এমন কোনও বিশেষ ট্রেন দিচ্ছে না। যদিও রেল বিষয়টি সরাসরি তৃণমূলকে জানায়নি। রেল জানায়, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর যে ধরনের সুযোগ সুবিধা চেয়ে আইআরসিটিসি ট্রেন চেয়েছে তা এই মুহূর্তে দেওয়া সম্ভব নয়। অভিষেক সেই চিঠির উল্লেখ করেই বলেছেন, ‘‘২৩ তারিখে বুকিংয়ের আবেদন করা হয়েছিল। আর শনিবার অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর ওই ট্রেনে রওনা হওয়ার কথা ছিল আমাদের। রেল তার জন্য টাকাও জমা নিয়েছিল। কিন্তু টাকা জমা নিয়েও শেষ মুহূর্তে ২৯ তারিখ বিকেলে ওরা জানাচ্ছে ওই ট্রেন দেওয়া সম্ভব নয়।’’
আইআরসিটিসির চিঠি দেখিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘এখানে স্পষ্ট লেখা আছে, টাকা ফেরত দেওয়া হবে। টাকা নিয়েছিল বলেই তো ফেরত দেবে। আজ যাঁরা দিল্লি যাওয়ার জন্য এই নেতাজি ইন্ডোরে এসে থাকছেন, তাদের অধিকাংশই মহিলা। ৯০ শতাংশ মহিলা কাঁধে কোলে বাচ্চা নিয়ে এখানে এসেছেন। অপেক্ষা করছেন দিল্লিতে গিয়ে নিজেদের অধিকারের কথা বলবেন বলে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাদের জানানো হল ট্রেন দেওয়া হবে না। কিন্তু কোনও শক্তিই আমাদের আটকাতে পারবে না। ট্রেন না দিলেও এই গরীব মানুষদের আটকে রাখা যাবে না। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করব।’’