চাঁচল: চাঁচলে ফের প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল। তৃণমূলের প্রধান ও বিধায়কের বিরুদ্ধে স্বজন পোষণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন দলেরই প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি। চাঁচল ১ ব্লকের কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন প্রধান।
দলীয় সূত্রের খবর, কোন্দল রুখতে কলিগ্রাম অঞ্চলকে সাংগঠনিকভাবে তিন ভাগে ভাগ করেছিল তৃণমূল। কলিগ্রাম অঞ্চলের (বি) সভাপতি ছিলেন জামিল খান। সম্প্রতি নবজোয়ার যাত্রা উপলক্ষ্যে জেলায় এসেছিলেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মালদায় জেলা নেতৃত্ব এবং পদাধিকারীদের নিয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেন তিনি। সেখানে একই অঞ্চলে একাধিক সভাপতি থাকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেন, একটা অঞ্চলে একজনই সভাপতি থাকবেন। সেই অনুযায়ী শুরু হয় প্রক্রিয়া।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলিগ্রাম অঞ্চল থেকে সভাপতি এবং চেয়ারম্যান হিসেবে নাম পাঠানো হয় যথাক্রমে মির্জা ইফতাবউদ্দিন এবং জিতেশ কুন্ডুর। আর এতেই বেজায় চটেছেন কলিগ্রাম অঞ্চলের (বি) প্রাক্তন সভাপতি জামিল খান।
সোমবার কলিগ্রামের নুরগঞ্জের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেজাউল খান এবং চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন।
বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা জামিল খানের অভিযোগ, ‘অঞ্চল সভাপতি এবং চেয়ারম্যান হিসেবে যাঁদের নাম পাঠানো হয়েছে তাঁরা প্রধান রেজাউল খানের ঘনিষ্ঠ। এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বিধায়কের বাড়িতে বসে নেওয়া হয়েছে। কেউ কোনও আলোচনা করেনি।’ তাঁর অভিযোগ, স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রধান নিজের ঘনিষ্ঠদের সেই পদে বসিয়েছেন। আর এতে মদত দিয়েছেন বিধায়ক। এই মর্মে তিনি জেলা সভাপতিকেও অভিযোগ করেছেন বলে দাবি জামিলের।
যদিও কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেজাউল খানের বক্তব্য, ‘কে দলের দায়িত্বে থাকবেন, সেটা শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করেন। কিন্তু যিনি আজ এসব অভিযোগ করছেন তিনি দুইদিন আগে পর্যন্ত আমার সঙ্গেই থাকতেন। তাঁর মানে বোঝা গেল উনি দলকে ভালোবাসেন না, পদ ভালোবাসেন। মানুষ আমাদের সঙ্গেই রয়েছে।’
অন্যদিকে, প্রধানের পাশে দাঁড়িয়ে সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। অভিযোগকারীদের ‘পদলোভী’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। বিধায়ক বলেছেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে এক অঞ্চলে একজন সভাপতি এবং চেয়ারম্যান করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যা অভিযোগ করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।’
এদিকে, দলীয় কোন্দল নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের চাঁচল ১ ব্লক সভাপতি অঞ্জারুল হক জনি বলেন, ‘তৃণমূলের এটাই চরিত্র। টাকার বিনিময়ে পদ দিলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো হবেই।’