বক্সিরহাট: মাছ চাষ করার জন্য তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের শালবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা একটি সরকারি পুকুর লিজে নিয়েছিলেন চন্দনা ডাকুয়া নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা। এরপর মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে শুক্রবার পুকুর থেকে মাছ তোলেন তিনি। সেইসময় সরকারি পুকুর থেকে মাছ চুরির অভিযোগ তুলে চন্দনাকে বাধা দেওয়ার অভযোগ ওঠে বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে শুরু হয় তুমুল বচসা। নিমিষেই তা হাতাহাতিতে পৌঁছায়। তাতে আহত হয়েছেন দু’জন মহিলা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের শালবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের শালবাড়ি বাজার সংলগ্ন এলাকায়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বক্সিরহাট থানার পুলিশ।
দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শালবাড়ি বাজার সংলগ্ন তুফানগঞ্জ-বোচামারি সংযোগকারী রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপির উপপ্রধান সহ দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। প্রায় ২ ঘণ্টা অবরোধের ফলে যানজটের সৃষ্টি হয় রাস্তায়। শেষ পর্যন্ত পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
পঞ্চায়েত সদস্যদের অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে ইজারা দেওয়া হয়েছে পুকুরের। কোন ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙা হয়েছে যদিও এর কোনওরকম ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তাঁরা। এদিকে সকালেই নিলামে বিক্রি করতে হয় মাছ। তাতে বাধা দেওয়ার ফলে সমস্ত মাছ নিয়ে মাঝ রাস্তাতেই বসে পড়েন চন্দনা। বিক্রি করতে না দেওয়ার ফলে পচে গিয়েছে সমস্ত মাছই।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শালবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। তার আগে বোর্ড ছিল তৃণমূলের দখলে। তৃণমূলের বোর্ড থাকাকালীন তিন বছরের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা একটি সরকারি পুকুর ইজারা নিয়েছিলেন চন্দনা ডাকুয়া। গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রতিমা বর্মন দাস জানান, সরকারি নিয়ম ভেঙে তৃণমূল ঘনিষ্ঠকে পুকুর লিজ দিয়েছিল তৎকালীন তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড। সেখান থেকে মাছ চুরির প্রতিবাদ করায় মায়া সরকার ও সাবিত্রী ভগৎ নামে দুই পঞ্চায়েত সদস্যের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে তৃণমূলের গুন্ডারা। চন্দনা ডাকুয়া জানান, সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়ে তিন বছরের জন্য পুকুর লিজে নিয়েছিলেন তিনি। পুকুর নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির কী গণ্ডগোল রয়েছে তা তাঁর জানা নেই। এ বিষয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ নেবেন। অন্যদিকে, বিজেপির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের তুফানগঞ্জ-২ ব্লক সহ-সভাপতি নিরঞ্জন সরকার জানান, টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর গণ্ডগোল হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।