কালিয়াগঞ্জ: বিশাল শালবনের গাছের তলায় পড়ে থাকা শুকনো পাতা আর খড়ির ভরসাতেই ঘরে দু’বেলা উনুন জ্বলে। গ্যাস সিলিন্ডার ঘরে থাকা যেন তাঁদের কাছে স্বপ্নের মতো। তাই চারশো বিঘা জমির উপর দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল শালবন আজও দৈনন্দিন অন্নের সংস্থান করে কালিয়াগঞ্জের (Kaliyaganj) বোঁচাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুরের ধামজা ফরেস্ট এলাকার বাসিন্দাদের৷ সারা বছর নেতারা তাঁদের কোনও খোঁজ রাখেন না। একমাত্র ভোট এলে রাজনৈতিক নেতাদের মন গ্রামীণ মানুষের জন্য আকুলিব্যাকুলি করে। তখন গ্রামের মেঠো পথ ধরে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির আনাগোনা বাড়ে। গ্রামবাসীরা তখন বুঝে যান ‘দুয়ারে ফের ভোট এসে গিয়েছে।’ প্রখর রৌদ্রের তাপ উপেক্ষা করে ঘন শালবনে পাতা কুড়িয়ে বস্তাবন্দি করে আনা এক মহিলা বলেন, ‘ঘরে উজ্জ্বলা গ্যাসের সুবিধা এখনও পাইনি। তাই, প্রতিদিন এই ফরেস্টে এসে লকড়ি নিয়ে গেলে তবেই বাড়ির উনুনে ভাত ফোটে।’
উল্লেখ্য, ভবানীপুর গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে সাতশো। কমবেশি ২৫০টি পরিবারের বাস রয়েছে এলাকায়৷ শ্রমজীবী ছাড়াও অধিকাংশ পরিবার কৃষি নির্ভরশীল। কর্মজীবনের অঙ্গ হিসেবে প্রতিদিন এলাকার প্রায় ২০ জন মহিলা হাতে ঘণ্টা খানেকের সময় নিয়ে বন দপ্তর অধিকৃত ধামজা ফরেস্টে শুকনো শালপাতা ও লকড়ি কুঁড়োতে আসেন। প্রকান্ড এলাকা জুড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই শালবনই যেন ওই এলাকাবাসীদের কাছে এক চরম প্রাপ্তি।