উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক রিপোর্টে কাঠগড়ায় ভারত। গত সোমবারই এই সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে মার্কিন বিদেশ দপ্তর। সেই রিপোর্টে ভারতে মুসলিম-খ্রিষ্টান সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিষয়টিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। মোদির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে এই রিপোর্ট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন সরকারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, তাঁরা চান ভারত ক্রমাগত চলতে থাকা ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘু’-দের উপর হিংসার কঠোর নিন্দা করুক। ওই আধিকারিক জানান, ভারত একটি বিশাল সম্ভাপনার দেশ, কিন্তু এমন দেশে সংখ্যালঘুরা ‘নিরবিচ্ছিন্ন’ আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছেন এমনটা দুঃখজনক। এক্ষেত্রে মার্কিন সরকার চায় যারা এমন সংখ্যালঘু বিরোধী কথা বলছেন বা কাজ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিক মোদির ভারত। উদ্বেগের কারণ হিসেবে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ঘৃণা ভাষণ, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ধ্বংসের জন্য প্ররোচনা এমনকী যারা সংখ্যালঘুদের উপর হামলায় জড়িত তাঁদের প্রতি ক্ষমাশীল নরম মনোভাবকেও রিপোর্টে দায়ি করা হয়েছে।
ভারতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের পাশাপাশি সরাসরি গবেষণার উপর দাঁড়িয়েই রিপোর্টে গুজরাটের মতো রাজ্যে মুসলিমদের উপর অত্যাচারের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলমান। হিন্দুরা প্রায় ৮০ শতাংশ। খ্রিষ্টান জনসংখ্যা ২ শতাংশের মতো। স্বশাসিত ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) এই মাসের শুরুতে আবারও ভারতকে ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কালো তালিকা ভুক্ত করার সুপারিশ করে। সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সরকার ২০২২ সালে ‘জাতীয়, রাজ্য এবং স্থানীয় পর্যায়ে ধর্মীয় বৈষম্যমূলক নীতির প্রচার ও প্রয়োগ করেছে।’ এর মধ্যে ধর্মান্তরকরণ, হিজাব বিতর্ক এবং গো হত্যার মতো বিষয় রয়েছে। ভারতকে ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ‘বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ’ হিসেবে মার্কিন সরকারের চিহ্নিত করা উচিত বলেও মনে করে ইউএসসিআইআরএফ। চলতি বছরের শেষ দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশগুলি’-কে তালিকাভুক্ত করবন তবে সেই তালিকায় ভারতকে রাখা হবে না বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা। ভারত-মার্কিন উষ্ণ সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে একথা বলাই যায়। সোমবারও রিপোর্ট প্রকাশ করে ব্লিঙ্কেন ভারতের নাম উল্লেখ করেননি। বরং তিনি চিন, ইরান, মায়ানমার ও নিকারাগুয়ার সরকারের পদক্ষেপে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।