উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিশ্বভারতীর ফলক-ইস্যুতে শান্তিনিকেতনে এখনও অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। এদিকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে মেয়াদকাল শেষ হতে চলেছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। উপাচার্য হিসেবে তাঁর মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে কি না, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। এই সবের মধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে রবীন্দ্রপ্রীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। প্রশংসার ছলে কি কটাক্ষ? উঠেছে প্রশ্ন।
বিভিন্ন ইস্যুতে নবান্নের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে বিশ্বভারতী। সম্প্রতি বিশ্বভারতীর ফলক-ইস্যুতে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ, বিশ্বভারতীর ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই, বদলে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে টানা ধরনা মঞ্চ চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।
মেয়াদকালের শেষলগ্নে বিশ্বভারতীর উপাচার্য পাঁচ পাতার চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রীকে। উপাচার্য সরাসরি লেখেন, ‘আপনার রবীন্দ্রপ্রীতি দেখে বিশ্বের আপামর সাহিত্য অনুরাগীর মতো আমিও মুগ্ধ। অবাক হই! রাজনীতির সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষ হয়েও আপনি কীভাবে সাহিত্য সৃষ্টিতে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। আমার জানা নেই যে, কেউ আপনার মতো এত গুণসম্পন্না আছেন কিনা? আপনার সাহিত্য খুব সহজেই কেন স্বীকৃতি পায়, তা সহজেই বোধগম্য। আপনার অঙ্কন প্রতিভা আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের কাছে অবাক হওয়ার জন্য যথেষ্ট। আপনাকে জানাই কুর্নিশ।’ হঠাৎ এগুলি লিখলেন কেন? এখন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আরও লেখেন, ‘সবশেষে বিশ্বভারতীতে পরিবর্তন হচ্ছে। তাই যারা তার থেকে ফায়দা নিতেন, তারা ভীত এবং প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে যেমন দপ করে জ্বলে ওঠে তারা এবার শেষ কামড় দিচ্ছেন।’
তবে এই চিঠির তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অসিত মাল বলেন, ‘শেষ দিন পর্যন্ত বিশ্বভারতীকে যতরকমভাবে পারছেন কলঙ্কিত করছেন। উনি একজন নোংরা উপাচার্য। বিশ্বভারতীর মানকে যেমন করে নামাচ্ছেন তার তুলনা নেই। তাঁর লেখা এই চিঠিকে ধিক্কার জানাই।’
এদিন তৃণমূলের ধরনা মঞ্চের সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, তিনি উপাচার্যের মেয়াদ শেষের অপেক্ষায় রয়েছেন। বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হলে শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতীর বিস্তীর্ণ এলাকা গোবরজল দিয়ে শুদ্ধ করবেন বলেও জানিয়েছেন অনুপম। তাঁর বক্তব্য, ‘এই ভিসি ভণ্ড। ইনি বিজেপি সাজার চেষ্টা করছেন, যাতে মেয়াদকাল বাড়ে। উপাচার্য শান্তিনিকেতনের ‘সেন্টিমেন্ট’ বোঝেন না। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ‘শান্তিনিকেতনের বুকে ভাইরাস’ বলেও কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা।