উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মণিপুর কাণ্ড নিয়ে লোকসভায় মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব আনল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। প্রস্তাবের শুরুতেই বিরোধীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর মৌনব্রত ভাঙতেই বিরোধীদের এই অনাস্থা প্রস্তাব আনা বলে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি।
অনাস্থার শুরুতেই তিনি বলেন, ‘দেশের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সংসদে আসুন, সমবেদনা জানান, এটাই চেয়েছিলাম আমরা। মণিপুরের মানুষ যাতে জানতে পারে যে, গোটা দেশ তাঁদের পাশে রয়েছে। কিন্তু তা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী মৌনব্রত পালন করছেন। না লোকসভা, না রাজ্যসভা। কোথাও তিনি মুখ খুলতে রাজি হননি। তাঁর মৌনব্রত ভাঙতেই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি আমরা।’ গৌরব জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী কেন নীরব? এর কারণ হল, মণিপুর হিংসা নিয়ে কথা বললে মণিপুরে বিজেপি-র ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ব্যর্থতা স্বীকার করতে হবে। মণিপুর অথবা উত্তর পূর্বাঞ্চলে এই প্রথম হিংসার ঘটছে না। এর আগেও ঘটেছে এমন ঘটনা। আমি নিজে সেখানকার বাসিন্দা। তাই আমি জানি।’
এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে মণিপুর জ্বলছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন কর্ণাটকে ভোট চাইতে। এটা কেমন রাষ্ট্রবাদ? দেশের থেকে এখানে ক্ষমতাকে আগে রাখা হয়।’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীয় প্রসঙ্গ টেনে সাংসদ বলেন, ‘বাজপেয়ী রাজধর্ম পালনের কথা বলেছিলেন। রাজা বা শাসকের কখনও প্রজাদের বৈষম্যের নজরে দেখা উচিত নয়। জন্ম, জাতি, সম্প্রদায়ের নিরিখে প্রজাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হতে দেওয়া উচিত নয়।’
এদিন অনাস্থা প্রস্তাবে মুলত তিনটি প্রশ্ন নরেন্দ্র মোদির কাছে রেখেছিল বিরোধী জোট। এক, প্রধানমন্ত্রী কেন এখনও পর্যন্ত মণিপুরে গেলেন না? দুই, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রাহুল গান্ধি যেতে পারলে প্রধানমন্ত্রীর যেতে বাধা কোথায়? তিন, কেন প্রধানমন্ত্রী এখনও পর্যন্ত মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেননি? এর আগে গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীদের সরিয়েছেন তিনি।
যদিও অনাস্থা বিতর্ক শুরু হওয়ার আগে বিরোধীদের নিয়ে সুর চড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনাস্থা ভোটাভুটি পরিষ্কার করে দেবে যে কারা একজোট রয়েছে, কারা নয়। আমরা ওঁদের ২০১৮ সালে অনাস্থা বিতর্কের সুযোগ দিয়েছিলাম। দেশের মানুষই ওঁদের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে।’