পূর্ব বর্ধমান: সেই দেবীপক্ষে কৈলাশ থেকে মর্ত্যে বাপের বাড়িতে এসেছিলেন দুর্গা। মর্ত্যবাসী চার দিন ধুমধাম করে তাঁর পুজো করেছেন। আজ দশমী। দেবী ফিরে যাবেন কৈলাসে। এই বিশেষ দিনে নীলকন্ঠ পাখির দর্শন পাওয়া অত্যন্ত সৌভাগ্যের বলে মনে করা হয়। এখন এই পাখির দর্শন প্রায় মেলে না বললেই চলে। তাই নিজের পোষ্য নীলকন্ঠ পাখিটিকে নিয়ে দশমীর দিন বেড়িয়ে পড়েন জগদানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অখড়া গ্রামের গৃহবধূ বাণী রায়। কাটোয়ার মুস্থূলী ও ঘোড়ানাশ গ্রামের বাড়িবাড়ি গিয়ে নীলকন্ঠ পাখির দর্শন করান তিনি। গৃহবধূরা পাখিটিকে সিঁদুর পড়িয়ে দেন।
দুর্গা পুজোর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এই পাখির। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুয়ায়ী দেবী যে মর্ত্য থেকে ফিরছেন সেই বার্তা নাকি নীলকন্ঠ পাখিই কৈলাসে মহাদেবের কাছে পৌঁছে দেয়। সেই বিশ্বাসে ভর করে দশমীর দিনে দুটি নীলকন্ঠ পাখিকে ওড়ানোর রীতি মানা হয় অনেক জায়গায়। এও বলা হয়, রাবণ বধের আগে এই নীলকন্ঠ পাখির দর্শন পেয়েছিলেন শ্রীরামচন্দ্র। আবার অনেকে মতে, নীলকন্ঠ পাখিই নাকি রামচন্দ্র ও তাঁর বাহিনীকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। এইসব নানা বিশ্বাস ও প্রচলিত ধরণা থেকে নীলকন্ঠ পাখির দর্শন লাভ শুভ বলে মনে করে থাকেন হিন্দুরা। বাণীদেবী জানান, বংশ পরম্পরায় তাঁদের পরিবার দশমীর দিনে এলাকার গৃহস্থদের নীলকন্ঠ পাখির দর্শন করিয়ে আসছেন। আর যারা এই পাখির দর্শন করছেন তাঁরা জানান, পরিবারের সকলের কল্যাণের জন্যই বছরের পর বছর এই রীতি তাঁরাও পালন করে আসছেন।