রায়গঞ্জঃ দলীয় কর্মীদের হাতেই আক্রান্ত হলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী চৈতালি ঘোষ সাহা। এই ঘটনায় জখম হয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নেত্রী। যদিও নেত্রীর ওপর আক্রমণের ঘটনা অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি নেত্রী পুরসভায় টিকিট পাওয়ার জন্য নাটক করছেন। এই ঘটনায় আবারও প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল।
ফের রায়গঞ্জে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। এবার দলীয়কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হলেন খোদ মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী চৈতালি ঘোষ সাহা। চৈতালিদেবী জানান, ‘আমি আজই কলকাতা থেকে নেমেছি, শরীরটা ভালো ছিল না। জ্বর ছিল। হঠাৎ দেখি কিছু ছেলে বাড়ির সামনে গন্ডগোল করছে। সেইসময় বাড়িতে একটি দলীয় মিটিং চলছিল। আমার নামে গালিগালাজ করছে দলেরই কয়েকজন কর্মী। আমি তাদের বোঝাতে যাওয়া মাত্রই আমাকে মারধোর করে তারা। এমনকি, ঘরের ভিতরে এসেও ভাঙচুর চালায়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে সবাই অন্য পাড়ার। প্রত্যেকেই তৃণমূলের কর্মী সমর্থক।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা মারধর করছে, হয় তারা থাকবে না হয় আমি থাকব। আমি পাঁচ বছর কাউন্সিলর ছিলাম, বিধায়ক সাহেব কো-অর্ডিনেটর করেছেন।’ তাঁর অভিযোগ, এদিনের ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়কের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ সাহা। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। যারা আজ এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমি তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এই মারধোরের ঘটনা সম্পূর্ন অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ সাহা। নেত্রীর ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরোটাই মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যে অভিযোগ করছেন উনি। মনসা পূজা উপলক্ষ্যে ওয়ার্ডে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর রক্তদান শিবির করা হবে। সেই অনুষ্ঠান যাতে বানচাল হয়ে যায় এবং নেতৃত্বরা যাতে না আসতে পারে সেজন্য এই সব নাটক করছেন চৈতালিদেবী। ওনার বাড়ির সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সবাই সবকিছু বুঝবেন। উলটো চৈতালিদেবীর অনুগামীরাই মেরেছে এক তৃণমূল কর্মীকে। আমরা গিয়ে প্রতিবাদ করলে আমাকে কানের নীচে মারেন চৈতালিদেবী।’
প্রসেনজিত বাবুর কথায়, ‘পাড়ার সমস্ত মানুষ ওনার বিরুদ্ধে। আমরা অনুষ্ঠান করছি ওটাই ওনার রাগ। উনি কি কারনে হাসপাতালে ভর্তি হল, সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে বোঝা যাবে। উনি যদি অসুস্থ হন তাহলে আমি জেলে যেতেও প্রস্তুত। উনি তো মানুষের ভোটে জেতেননি। সামনে ভোট তাই নাটক করছেন। মানুষকে ভয় দেখানো, ঘরের টাকা নেওয়া সব অভিযোগ রয়েছে ওনার বিরুদ্ধে। ওনার ওয়ার্ডে কেউ বাড়ি বিক্রি করতে পারেনা। সতি কথা মানুষের কাছে বলছি এটাই ওনার রাগ।’
মহিলা নেত্রীকে মারধরের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পৌরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন অরিন্দম সরকার। তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে ন্যাক্কারজনক ঘটনা। কারণ উনি একজন মহিলা নেত্রী। আগামীদিনে পৌরসভার লড়াইয়ের জন্য গ্রুপ তৈরি হচ্ছে। টিকিট দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই, অন্যদেরও নেই। কিন্তু কেউ কেউ লবিবাজি করার জন্য এই কাজ করছেন। আমরা রাজ্যকে জানাব।
বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী বলেন, ‘বিধায়কের লোকজন গোটা রায়গঞ্জে আছেন। চৈতালি ঘোষ সাহাও আমার পরিবারের লোক। তাই আগে তদন্ত হবে, তারপর সেই বিষয়ে মুখ খুলব।’