নয়াদিল্লি: একসময় লোকসভায় দাঁড়িয়ে কয়লা পাচার সহ রাজ্যের একাধিক দুর্নীতি কাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন, সরব হয়েছেন বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ৷ সোমবার অবশ্য তার ব্যতিক্রম। এদিন প্রায় চার বছর পর সংসদের সেন্ট্রাল হলে অভিষেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল সৌমিত্রের।
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিরোধী বিক্ষোভে লোকসভার কাজ মুলতুবি হলে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে সেন্ট্রাল হলে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় কাটান অভিষেক, সাক্ষাৎ করেন কংগ্রেস, ডিএমকে সহ বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে। সেখানেই রাজ্যের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তাঁর৷
সৌমিত্র এবং অভিষেক দুজনেই একে অন্যের কুশল বিনিময় করেন। সামান্য কিছু সৌজন্য আদান-প্রদান করেন তাঁরা৷ এর পর ব্যস্ত হয়ে পড়েন নিজ নিজ পরিসরে৷ অভিষেকের সঙ্গে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর এই সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় মহলে৷ প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি বরফ গলার কাজ শুরু হল? বিজেপি সাংসদের ‘ঘর-ওয়াপসি’র সম্ভাবনা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।
সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ পদ খারিজের দাবি তোলেন সৌমিত্র৷ এই দাবিতে তিনি লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠিও দিয়েছেন। চিঠিতে বিজেপি সাংসদের বক্তব্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বিরুদ্ধে সরব হয়ে অভিষেক যে ভাষায় বিচার ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন, তা চরম অবমাননার শামিল। তিনি সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছেন সাংসদ হয়ে। সেই সংবিধানকেই তিনি অমান্য করেছেন, বিচার ব্যবস্থার অবমাননা করেছেন। একই সঙ্গে সৌমিত্র তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের গ্রেপ্তারির দাবি করেন। অভিষেকের বিরুদ্ধে এফআইআর করবেন বলেও বিজেপি সাংসদ জানান। যদিও পরবর্তীতে সেই এফআইআর করেছিলেন কিনা বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ, সে কথা অজানা৷
সেই আবহে সোমবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌমিত্র খাঁ-এর এহেন সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং কুশল বিনিময় নতুন করে চর্চার ইন্ধন উস্কে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। অবশ্য এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরাসরি মুখ খোলেননি কেউই।
সোমবার ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সম্মিলিত বিরোধী ধর্নায় অংশ নিতে কলকাতা থেকে নয়াদিল্লি আসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জোট শিবিরের ধর্নায় দলকে নেতৃত্ব দেন, লোকসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেন তিনি। পরে বিকেলের ফ্লাইটে কলকাতা ফিরে যান অভিষেক।
তার আগে সোমবার সংসদে দলীয় কার্যালয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অভাবনীয় জয়ের জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, সৌগত রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের প্রবীণ সাংসদরা। পাশাপাশি লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লার সঙ্গেও এদিন সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন অভিষেক। চলতি মাসেই চিকিৎসার জন্য তাঁর বিদেশযাত্রার সম্ভাবনা রয়েছে।