উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তা ফেরতের আবেদন জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেই আক্রমণ করলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে লেখা হয়েছে, “আপনি এখনও কান দিয়ে দেখেন।” সেই সঙ্গে মন্ত্রীসভা ও একাধিক তৃণমূল নেতা গ্রেপ্তার প্রসঙ্গেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
মাস দেড়েক আগেই ইউনেসকোর তরফে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পেয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পাওয়ার পরই উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তা পূর্ত দপ্তরের কাছ থেকে বিশ্বভারতীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেই আবেদনে রাজ্যের তরফে সারা না পেয়ে উপাচার্য ফের গত ৩০ সেপ্টেম্বর আরও একবার চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তাতেও সারা দেয়নি রাজ্য। আর এদিন উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তা ফেরত চেয়ে তৃতীয় চিঠি লিখলেন উপাচার্য।
জানা গিয়েছে, এই চিঠিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, “আপনি এখনও কান দিয়ে দেখেন।” শুধু তাই নয়, রাজ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে দুর্নীতির অভিযোগ এবং তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারি নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, আপনার মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী গ্রেপ্তার হয়েছেন। আপনার বিশ্বস্ত নেতারা (কেউ বীরভূম থেকে) জেলে রয়েছেন। কেউ তিহাড়েও রয়েছেন। সেই সঙ্গে ফলক সরিয়ে নেওয়ার কথাও চিঠিতে জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে লেখা এই চিঠি ঘিরে ফের বিতর্কে কেন্দ্রে বিশ্বভারতীর উপাচার্য।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুত চক্রবর্তীর এই চিঠি নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেছেন, “চিঠির ভাষা কী আছে জানি না। বর্তমান উপাচার্য এমন ভাব দেখাচ্ছেন, যেন সবকিছু তাঁর নিজস্ব। আমরা চাই বিশ্বভারতী নিজের ঐতিহ্য নিয়ে চলুক। কিন্তু উনি যেভাবে চলছেন তাতে বিশ্বভারতী থেকে রবি ঠাকুরকে মুছতে চাইছেন। এটা নিয়েই আমাদের আপত্তি।” তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিশ্বভারতীর উপাচার্যের ভাষা এটা হতে পারে না।”
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “রবীন্দ্র আদর্শের সঙ্গে যাঁর কোনও সম্পর্ক নেই, তিনি বিশ্বভারতীর উপাচার্য হয়েছেন। দিল্লির নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই এই পদ পেয়েছেন। এটা খুবই বিপজ্জনক। এটা আমাদের রাজ্যের সংস্কৃতির সঙ্গে কখনই যায় না। মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি চিঠি দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবির সঙ্গে আমরা সহমত কি না, সেটা বড় কথা নয়। আমার দাবি, ওই ফলক থেকে প্রধানমন্ত্রীর নাম বাদ দেওয়া উচিত। এই উপাচার্য কাউকে মানছেন না। সীমা লঙ্ঘন করে চলছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।”