কোচবিহার: রাস্তার দাবিতে বহুবার সরব হওয়া সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। তবে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ায় শেষপর্যন্ত সেই কাজ হল। সব মিলিয়ে কোচবিহার জেলায় ২২২ কোটি টাকার রাস্তা হবে। লোকসভা ভোটের আগেই রাজ্য সরকার এই রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করে দিতে চাইছে। তবে এর আগে একই ইস্যুতে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, কোচবিহার জেলা পরিষদ সহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির দ্বারস্থ হওয়া সত্ত্বেও কেন কাজ হল না সে বিষয়ে প্রশ্ন জোরালো হয়েছে। সাধারণের সঙ্গে কি তাহলে জনপ্রতিনিধিদের সেভাবে যোগাযোগ নেই বলেও প্রশ্ন জোরালো হয়েছে।
কোচবিহার জেলা পরিষদের এইও সৌমেন দত্ত বলেন, ‘সরাকারি নির্দেশ মেনে রাস্তার টেন্ডার করা হয়েছে। ওই প্রক্রিয়া ঠিকঠাক থাকলে ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’ কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা বর্মন বললেন, ‘বাসিন্দারা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের সেই অধিকার রয়েছে।’ সরকারি নির্দেশ মেনেই কাজ করা হবে বলে সভাধিপতি জানিয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, কোচবিহার জেলায় পথশ্রী–২ প্রকল্পে সব মিলিয়ে এবার ৩২৭টি রাস্তার কাজ হবে। তার মধ্যে জেলা পরিষদ ১০৭টি রাস্তা, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি ১১২টি রাস্তা ও ব্লকগুলি ১০৮টি রাস্তার কাজ করবে। এক কিলোমিটার থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তাগুলি কোচবিহার জেলা পরিষদ, দুই কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি, ১০০ মিটার থেকে এক কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তা ব্লকগুলি তৈরি করবে। রাস্তাগুলি পিচ ও কংক্রিটের হবে। এরজন্য ২২২ কোটি টাকা খরচ হবে। ইতিমধ্যেই এই রাস্তাগুলির জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে দু’চারদিনের মধ্যে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হবে। তবে ৯ ফেব্রুয়ারির পর আর কোনও ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া যাবে না বলে রাজ্যের নির্দেশ রয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন জেলার বাসিন্দারা রাস্তা নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ফোন করে জানিয়েছিলেন তা থেকেই রাস্তার তালিকা তৈরি হয়েছে। পথশ্রী–২ প্রকল্পে রাস্তা তৈরি করতে এবার রাজ্য এই উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে প্রশ্ন যেখানে গ্রামে গ্রামে সমস্ত জনপ্রতিনিধি শাসকদলের সেখানে সাধারণ মানুষ কী কারণে এত অভিযোগ করছে। পাশাপাশি, সমস্যা মেটাতে সবাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে শেষপর্যন্ত দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই প্রশ্ন জোরালো হয়। লোকসভা ভোট ঘোষণার আগেই ওয়ার্ক অর্ডার করে রাজ্য সরকার এই রাস্তাগুলির কাজ শুরু করে দিতে চাইছে।
নতুন রাস্তার দাবির পাশাপাশি রাস্তার গুণগত মান নিয়েও বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এর আগে বহুবার নতুন রাস্তা খারাপ হয়ে গিয়েছে। নিম্নমানের রাস্তার কাজের অভিযোগে বাসিন্দারা বহু জায়গায় সরব হয়েছেন। আন্দোলন হয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় কাজ হয়েছে, কোথাও হয়নি। এবারের নতুন রাস্তাগুলির ক্ষেত্রে যাতে এমনটা না হয় সেজন্য বাসিন্দারা আগাম আর্জি জানিয়েছেন।