তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করার। সেই স্বপ্নই যেন পূর্ণ হল শিলিগুড়ির সাগ্নিক সাহার। নিউ ইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করার পর এবার তিনি উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন ইউএসএ’র ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় আরবানা শ্যাম্পেইনে। এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের সেরা অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম বলে পরিচিত।
মেধাবী মানেই সারাদিন বইয়ের সামনে বসে থাকা। শিবমন্দিরের রামকৃষ্ণ সরণির বাসিন্দা সাগ্নিক এই তত্ত্বকথায় একেবারেই বিশ্বাসী নন। পড়াশোনার পাশাপাশি ভালোবাসেন ক্রিকেট খেলা দেখতে। আর সেটা মহেন্দ্র সিং ধোনির খেলা হলে তো কথাই নেই। মন ভালো রাখতে শোনেন বিভিন্ন ধরনের গানও। এসবের সঙ্গে যদিও ছোট থেকে তাঁর লক্ষ্য স্থির ছিল।
২০১৯ সালে টাটার স্কলারশিপ পেয়ে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পান জিডি গোয়েঙ্কার এই প্রাক্তনী। সেখান থেকেই পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন তিনি। ২০২৩ সালে স্নাতক হওয়ার পর গবেষণার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। শুধু ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নয়, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও বেশ কয়েকটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাস্ট্রোফিজিক্স নিয়ে গবেষণার ডাক পেয়েছেন তিনি। সাগ্নিকের কথায়, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার সুযোগ পাওয়া সহজ নয়। আমি স্নাতক স্তরে যেসব গবেষণামূলক কাজ করেছি, সেগুলো পর্যালোচনার পাশাপাশি আমার গ্র্যাজুয়েশনের রেজাল্টও দেখা হয়। পাশাপাশি ইন্টারভিউ দিতে হয়েছে।’
ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় আরবানা শ্যাম্পেইনকে এককথায় নোবেলজয়ীদের পীঠস্থান বলা যেতে পারে। অনেকেরই স্বপ্ন থাকে এরকম একটা বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা করার। সাগ্নিকও তাঁদের মধ্যে একজন। সাগ্নিক বলেন, ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাই এখানে পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়া মানে নিজের স্বপ্নপূরণের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া।’ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, জানালেন, এখনও সেভাবে কিছু ভাবেননি, আপাতত গবেষণায় মনোনিবেশ করতে চান।
ছেলের একের পর এক সাফল্যে গর্বিত মা রুমা সাহা। তিনি বলেন, ‘ছোট থেকেই পড়াশোনা নিয়ে সাগ্নিক খুব সচেতন। বিভিন্ন রকমের বই পড়তে খুব ভালোবাসে।’ সাগ্নিকের এই গবেষণা যাতে ভবিষ্যতে দেশের কাজে লাগে, সেটাই ইচ্ছে বাবা মেখলিগঞ্জ কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর প্রসেনজিৎ সাহার।