উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রতিবার ভোট আসলেই হুংকার দিতেন অনুব্রত মণ্ডল। এই হুংকার থেকে বাদ যেতেন না পুলিশ থেকে বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও। চড়াম চড়াম, গুড় বাতাসা খাওয়ানোর টিপস দিতেন কেষ্ট মণ্ডল। এমনকি পুলিশকে বোমা মারারও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। বীরভূমে বিরোধীরা বিগতদিনে কার্যত মাথা তুলতে পারতেন না। একটা আসনও যাতে বিরোধীরা দখল করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করার জন্য নয়া টোটকা প্রয়োগ করতেন কেষ্ট মণ্ডল। বিরোধীরা দাবি করতেন, বীরভূমের মাটিতে ভয় দেখিয়ে ভোট লুট করাই ছিল অনুব্রত মণ্ডলের মুল কাজ।
রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রীর কথায় বীরভূমের বীর কেষ্ট মণ্ডল। ফিরহাদ হাকিম মনে করেন বীরভূমের বাঘ কেষ্ট। আবার সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই মুহূর্তে বীরভূমের বাঘ অনুব্রত মণ্ডল তিহাড় জেলে বন্দি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি জেল থেকে মুক্ত হতে পারবেন বলেও মনে করছে না দল। এই পরিস্থিতিতে বীরভূমের মাটিতে সিংহভাগ আসনে জয় ধরে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের। তবে এবার বীরভূমের সব পঞ্চায়েত আসনে জেতার ডাক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নবজোয়ার কর্মসূচিতে উপস্থিত অভিষেক এদিন বীরভূমের মাটিতে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘১০টি গোল আমরা দিয়েছি। একটিতে হেরেছি। কিন্তু আগামী নির্বাচনে ১১-০ হবে। আর পঞ্চায়েতকে সামনে রেখে মানুষের আশীর্বাদ আর ভালোবাসাকে পাথেয় করে প্রত্যেকটা পঞ্চায়েতে আমাদের জিততেই হবে’।
তবে বিরোধীরা এনিয়ে তীব্র কটাক্ষ করা শুরু করেছেন। তাদের দাবি, এবার আসল কথাটা বেরিয়ে পড়েছে। সন্ত্রাস চালিয়ে তৃণমূল সব আসন দখল করতে চাইছে। আগে হুঙ্কার দিয়ে বলতেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই কথাটাই কার্যত পরিশীলিতভাবে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবার অনুব্রতহীন বীরভূমে সমস্ত আসনে জয় নিশ্চিত করা এবার তৃণমূলের কাছে কার্যত অগ্নিপরীক্ষা। অন্যদিকে এতদিন অনুব্রত মণ্ডলের জন্য আসন জেতা যাচ্ছে না বলে অজুহাত খাড়া করতেন বিরোধীরা। সেক্ষেত্রে এবার বিরোধীরা কতগুলি আসন বীরভূমে দখল করতে পারে সেদিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। তবে গণতন্ত্রে বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কতটা স্বাস্থ্যকর সেই প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।