উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে আইনি নোটিস ধরালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজনৈতিকভাবে অভিষেকের সমালোচনা করতে গিয়ে টুইটে ‘পতিতা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। সেলিমের টুইট ঘিরে সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বুধবার সন্ধ্যায় রাজনীতির গণ্ডি ছাড়িয়ে আইনি বাঁক নিয়ে নিল। এদিন সেলিমকে আইনজীবী সঞ্জয় বসুর মাধ্যমে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন অভিষেক। নোটিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সমাজমাধ্যমে ক্ষমাপ্রার্থনা করে ওই টুইটটি না মুছে দিলে সেলিমের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করবেন অভিষেক।
গত সোমবার মহম্মদ সেলিম টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘তিনি (অভিষেক) তাঁর অসাধু সম্পদ রাখার করার জন্য ১৫ জন বিদেশি পতিতার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিলেন।’’ পাশাপাশি, অভিষেকের নাম না করে ‘মাফিয়া-ডন’ বলেও আক্রমণ শানিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক। কিন্তু ওই লেখার সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সহ একটি রিপোর্ট ‘শেয়ার’ করেছিলেন তিনি। তাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, সেলিম কাকে লক্ষ্য করে ওই কথা লিখেছেন। টুইটে সেলিম ‘পতিতা’ শব্দ ব্যবহার করায় এদিন সেলিমের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন যৌনকর্মীরা। যৌনকর্মীদের অভিযোগ, পতিতা শব্দের ব্যবহারে অপমানিত হয়েছেন তারা। এরপরই সন্ধ্যায় সেলিমকে আইনি নোটিস ধরায় অভিষেক।
টুইটে ‘পতিতা’ (প্রস্টিটিউট) শব্দটি ব্যবহার করা নিয়ে ঘরে-বাইরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন সেলিম। ওই টুইটটি না-মুছলেও পরে ফেসবুক পোস্টে ‘পতিতা’ শব্দটির বদলে ‘যৌনকর্মী’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন সেলিম। কিন্তু তাতে তাঁর বক্তব্য বদলে যায়নি। ফলে এই আইনি নোটিসে সেলিমের ‘বিড়ম্বনা’ আরও বাড়ল।
যদিও এই আইনি নোটিসকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না সিপিএম নেতারা। তবে দলের একাংশ মনে করছে ‘আলটপকা’ কথা লিখে অযথা বিতর্কে জড়িয়েছেন সেলিম। সমাজমাধ্যম ব্যবহারে আরও সতর্ক থাকা উচিত।
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ বোস বলেছিলেন, ‘‘আমরা প্রস্টিটিউট (পতিতা) শব্দটা বলি না। আমরা সেক্স ওয়ার্কার (যৌনকর্মী) বলি।’’ একই কথা বলেছিলেন সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর নেতা অনাদি সাহুও।
অভিষেক সংক্রান্ত সেলিমের টুইট নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এর ওপর অভিষেকের সেলিমকে পাঠানো আইনি নোটিস বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে বিতর্কে। এখন দেখার সেলিম ওই নোটিসের দাবি অনুযায়ী সমাজমাধ্যমে ক্ষমাপ্রার্থনা করে টুইটটি মুছে দেন কি না।