আলিপুরদুয়ার: গত সপ্তাহেই বিধানসভা অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ার জেলায় হাসিমারায় বায়ুসেনার ছাউনিতে এয়ারপোর্ট তৈরির বিষয়ে চিন্তা করছে রাজ্য। এই ঘোষণার পর আবার গতি পেল হাসিমারায় এয়ারপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া। ছয় মাস পর আবার জমি নিয়ে সাতালি চা বাগান কর্তৃপক্ষর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার এবং আগামী দশ দিনের মধ্যে জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে। এই খবরে রীতিমত খুশির আমেজ জেলাজুড়ে।
জেলার কালচিনি ব্লকের হাসিমারায় সাধারণ মানুষের জন্য বিমান পরিষেবার শুরুর রাস্তা যেন আরেকটু এগিয়ে আসল বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। এই জায়গায় বিমান পরিষেবা চালুর দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও গত বছর থেকে বাস্তবায়নে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে জেলাবাসী। গত বছর জুন মাসে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যাতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে দেখা করে হাসিমারা থেকে বিমান পরিষেবা চালুর প্রস্তাব দেন। এরপর কেন্দ্রীয় সরকার এয়ারপোর্টের রানওয়ে বাড়ানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ৩৪ একর জমি চায়। বায়ুসেনার ছাউনিতে রানওয়ে বাড়ানোর জন্য হাসিমারার সাতালি চা বাগানের জমি নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। সেই মত ওই চা বাগান কর্তৃপক্ষর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে রাজ্য সরকার। এবছর রাজ্য প্রশাসনিক ভবন নবান্নে চা বাগানের মালিক পক্ষের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কারের উচ্চ পদস্থ অধিকারিকরা বৈঠক করেন।
চা বাগান কর্তৃপক্ষ মূলত জমির বর্তমান বাজার মূল্যের একটা অংশ এবং চা গাছের দাম দাবি করে। রাজ্য সরকার ওই সময় জানিয়েছিল তারা জমির কত দর ও গাছের কি দর দেবেন সেটা একটা প্যাকেজ তৈরি করে সাতালি চা বাগান কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। সেই বৈঠকের পর ছয়মাস কেটে গেলেও সেই প্রস্তাব আসেনি আর আলোচনাও আগায়নি। তবে গত সপ্তাহে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর সেই প্রক্রিয়া আবার গতি পেয়েছে। আগামী দশ দিনের মধ্যে চা বাগান কর্তৃপক্ষকে প্যাকেজ পাঠাতে পারে রাজ্য সরকার।
পুরো বিষয়টি নবান্ন থেকে দেখা হলেও এই নিয়ে জেলা প্রসাশনের কর্তারা কোনও মুখ খুলেছেন না। তাদের কাছে এই বিষয়টি জানা নেই বলে জানাচ্ছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কয়েকমাস আগে সাতালি চা বাগানের ওই জমির বিবরণ, জমির বর্তমান মূল্য সবই জেনে নিয়েছে নবান্ন সেগুলো হিসেবেই চা বাগান কর্তৃপক্ষর কাছে প্রস্তাব যেতে পারে। আবার কয়েকদিনের মধ্যে জেলা প্রসাশনের কাছে নতুন তথ্যও চাওয়া হতে পারে।
এবিষয়ে সাতালি চা বাগানের মূল কোম্পানি হাসিমারা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কোম্পানি সেক্রেটারি প্রকাশ চন্দ্র ভাণ্ডারির বক্তব্য, ‘রাজ্য সরকার থেকে এতদিন কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। আমরা জমি দিতে যে রাজি সেটা আগেই জানিয়েছি। তবে আমাদের দাবি গুলো মানতে হবে।রাজ্য সরকার জানিয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের প্রস্তাব পাঠাবে।’