অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: আধার কার্ড (Aadhaar Card) নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তর্জার মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পোস্টম্যান মারফত অনেকের বাড়িতে পৌঁছেছে আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরেও কয়েকজনের কাছে পৌঁছেছে সেই বাতিলের চিঠি। এই উৎকণ্ঠার আবহে আধার আতঙ্ক ক্রমশই গ্রাস করছে শহরের সাধারণ মানুষকে। একজনের আধার বাতিলের খোঁজ মিললেও অনেক ক্ষেত্রেই ভুয়ো আধার বাতিলের (Aadhaar Deactivation) খবরও উড়ছে চারদিকে।
শহর জলপাইগুড়িতে যাঁদের আধার কার্ড বাতিল হয়েছে বলে খবর ছড়িয়েছে তাঁদের খোঁজ করে দেখা গেল একজন ছাড়া কেউ কোনও বাতিলের চিঠিই পাননি। একজন নির্দিষ্ট ওই এলাকায় থাকেন না। আবার কারও বাড়ি বন্ধ গত এক বছর ধরে।
সোমবার বিকেলে জলপাইগুড়ি পান্ডাপাড়া কালীবাড়ি পোস্ট অফিস থেকে ফোন যায় খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মুকুল দাসের কাছে। পোস্ট অফিসে গিয়ে চিঠি নিয়ে বাড়িতে এসে তিনি চিঠি খুলে দেখেন লেখা আছে আধার ডিঅ্যাক্টিভেট করা হয়েছে। মুকুলবাবুর অভিযোগ, কিছুদিন আগে ১২০০ টাকা দিয়ে আধার-প্যান লিংক করা হয়েছে। এখন আবার এই চিঠি। তিনি বলেন, ‘কিছুই বুঝতে পারছি না। কেন এমন চিঠি দেওয়া হল।’
ডাক বিভাগের সূত্রে আধার বাতিলের খবর পেয়ে পান্ডাপাড়ার ৮ নম্বর গলিতে গিয়ে দেখা গেল দিলীপ মালাকারের আধার বাতিলের খবরটাই ভুয়ো। তাঁর কাছে নতুন আধার এলেও আসেনি বাতিলের কোনও চিঠি। তাঁর কথায়, ‘আমার কাছে আধার বাতিলের কোনও চিঠি আসেনি। যে চিঠি এসেছে সেটা অন্য।’
অন্যদিকে, ডাঙ্গাপাড়ায় ডালিম রায়ের আধার বাতিলের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখা গেল তাঁর বাড়ি বন্ধ রয়েছে। এক বছর ধরে ওই বাড়িতে কেউ থাকেন না। শ্যামলী সরকার নামের এক মহিলার নামের আধার বাতিলের কথারও সত্যতা বলা সম্ভব নয় কারণ এই নামে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শহরজুড়ে আধার বাতিল নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
এই বিষয়ে খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কানন অধিকারী বলেন, ‘আমার কাছে খবর এসেছে যে আমার এলাকার এক-দুজনের কাছে আধার বাতিলের চিঠি এসেছে। সেই মতো আমরা খোঁজ নেওয়া শুরু করেছি। আধার বাতিল হয়েছে এমন একজন মানুষের খোঁজ পেয়েছি। আমরা খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা শুনেছি যে অনেকের কাছেই আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি এসেছে। এই আধার মানুষের সব কাজে লাগে। ব্যাংক থেকে শুরু করে রুপশ্রী, কন্যাশ্রী, বার্ধক্যভাতা সহ সব কাজেই। এই আধার বাতিল করা মানে মানুষকে বিপদে ফেলা। এটা হলে প্রচুর মানুষের ক্ষতি হবে। আমরা চেষ্টা করব কারও আধার বাতিল হলে তাকে সর্বতোভাবে সাহায্য করার।’