সপ্তর্ষি সরকার, ধূপগুড়ি: দুই সভাস্থলের মাঝে দূরত্ব মেরেকেটে দেড় কিলোমিটার। এক মাঠে গত রবিবার তৃণমূলের (TMC) জামানত বাজেয়াপ্ত করার হুংকার দিয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রধান সেনাপতি নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। আর দ্বিতীয় মাঠে এখন বিরোধী শিবিরের সেনাপতির সভাস্থল তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। আগামী ১২ এপ্রিল ধূপগুড়ির (Dhupguri) ঝুমুরের সেই মাঠেই সভা করবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
মোদির সভার পর অভিষেকের সভা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে৷ অভিষেকের সভার জন্য এশিয়ান হাইওয়ের ধারে যে মাঠটি বেছে নেওয়া হয়েছে, তা মোদির সভার মাঠের তুলনায় ছোট। তবে ভিড়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাইছেন তৃণমূল নেতারা। মুখে স্বীকার না করলেও এলাকা ধরে ধরে জমায়েতের টার্গেট বেধে দিয়েছেন নেতারা। সেই কাজে বুথ, অঞ্চল ধরে নজরদারি চালাচ্ছেন দলের পরামর্শদাতা সংস্থার কর্মীরাও। শ’দুয়েক গাড়ির পাশাপাশি হাজার পাঁচেক টোটোয় চাপিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সভায় আনার ব্যবস্থা থাকছে বলেই খবর।
তৃণমূল কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ বলছেন, ‘কত মানুষ আসবেন তা সভার দিনই সবাই দেখে নেবেন। এতটুকু বলতে পারি, বিজেপির মতো ভিনজেলা এবং ভিনরাজ্যের ভাড়াটে লোক এনে সভা ভরানোর চেষ্টা তৃণমূল করবে না।’
মুখে আত্মবিশ্বাসী শোনালেও বড় জমায়েত যে সহজ কাজ নয়, তা বিলক্ষণ বোঝেন তৃণমূল নেতারা। সেজন্যে টার্গেট বেঁধেই কাজ চলছে। জমায়েতের পাশাপাশি অভিষেকের সভায় উন্নয়ন চমক দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূলের। গত বছর সেপ্টেম্বরে ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনের মুখে নির্বাচনি আচরণবিধির মধ্যেই ঠিক যেভাবে মহকুমা ইস্যুতে চমক দিয়েছিলেন অভিষেক, তেমন কোনও চমক এবারেও দেওয়া যায় কি না তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। এককথায় উন্নয়ন অস্ত্রেই মোদির সভার ইমেজ ম্লান করতে চাইছে তৃণমূল।
ভোটের আগে ১৬ এপ্রিল ধূপগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সভা করার কথা ছিল। কিন্তু তা বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাঁর বদলে সভা করতে আসছেন অভিষেক। সভায় তরুণ ভোটার তথা যুব অংশের উপস্থিতি বড় সংখ্যায় রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে প্রচারের ইউএসপি করার লক্ষ্যেই মহিলাদের উপস্থিতিতেও বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে।
জমায়েত এবং উন্নয়নের জোড়া ফলায় সভা সফল করার পরিকল্পনা নিয়ে কটাক্ষ করছেন পদ্ম নেতারা। বিজেপির ধূপগুড়ি বিধানসভা কমিটির আহ্বায়ক চন্দন দত্তের কথায়, ‘মালবাজার ও জলপাইগুড়িতে পিসির দুই দুটি ফ্লপ শোয়ের পর এবার ভাইপোর ফ্লপ শো হতে চলেছে। মোদি ম্যাজিকে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে তৃণমূল।’