জলপাইগুড়ি ২৮ মার্চ: প্রার্থী মটর সাইকেল চালাচ্ছেন। পাশেই বসে রয়েছেন নির্বাচনী এজেন্ট বিমল বর্মন। কাকভোরে বাড়ি থেকে ডাল, আলু সেদ্ধ ভাত খেয়ে বেড়িয়ে পড়ছেন। প্রার্থীর গাড়ি ভাড়া করবার আর্থিক ক্ষমতা নেই। পোষ্টার, ফেস্টুনও লাগাতে তিনি অক্ষম। অন্তরায় সেই অর্থই। ভরসা মোটর সাইকেলই। সাতটি বিধানসভা ক্ষেত্রেই মোটর সাইকেলে চেপে নির্দিষ্ট গন্তব্য স্থলে গিয়ে নির্বাচনী প্রচার করছেন। ভূমি পুত্র ইউনাইটেড পার্টির প্রার্থী তথা বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা অধীর চন্দ্র বর্মন এর প্রচারের এই পদ্ধতি দেখে নির্বাচক মণ্ডলী বিস্মিত।
বিশ্বায়নের যুগে তড়িৎ গতিতে পেঁৗছানোর অনেক ব্যবস্থা থাকলেও তা গ্রহণ করতে পারছেন না অধীর বাবু। ছোট – বড় মিলিয়ে তিন হাজার গ্রাম। চারটি পুরসভা। জলপাইগুড়ি (সংরক্ষিত) আসনের ভৌগলিক সীমারেখা এই নিয়েই বিস্তৃত। ভোটারের সংখ্যা ১৮ লক্ষ ৯১ হাজার ৮৭৯। এই বিপুল সংখ্যক ভোটারের কাছে মোটর সাইকেলে চেপে পৌঁছনোর জন্য নির্বাচনী রণ কৌশল ঠিক করেছেন এই প্রার্থী। প্রার্থী বিশ্বাস করেন নির্বাচনের সময়ে দলের দৃষ্টিভঙ্গির কথা মানুষের কাছে পৌঁছনোর আদর্শ সময়। এই সময়কে হাত ছাড়া করতে নেই। উত্তরবঙ্গের ভূমি পুত্র রা শোষিত ও বঞ্চিত। শোষণ আর বঞ্চনার বিরুদ্ধেই তাদের লড়াই। নির্বাচনী প্রচারে বেড়িয়ে জানতে পারেন জলপাইগুড়িতে নির্বাচনী দপ্তরে আরও কিছু নথি জমা দিতে হবে। ময়নাগুড়ি ব্লকের মাধব ডাঙা গ্রামের মধ্য ৩০ এর অধীর চন্দ্র বর্মন প্রচারের ময়দান থেকে নির্বাচনী এজেন্ট কে নিয়েই জলপাইগুড়িতে আসেন বৃহস্পতিবার। নির্বাচনী দপ্তরে প্রয়োজন অনুসারে সমস্ত নথি জমা দিয়ে আবার বেড়িয়ে পড়েন প্রচারে। জেলা শাসকের দপ্তর থেকে বের হবার পর কালেক্টরেট অ্যাভিনিউ তে এই প্রার্থীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হল। তিনি বলেন মানুষের কাছে পৌঁছনো আমাদের লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই ভূমিপুত্র ইউনাইটেড পার্টির কথা জলপাইগুড়ি লোকসভা ক্ষেত্রের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, রাজগঞ্জ, জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, মাল এবং মেখলিগঞ্জ বিধানসভার নির্বাচক মণ্ডলী শুনেছেন। গ্রাম এবং শহরের মানুষ আমাদের কথা শুনতে আগ্রহী। তাই প্রতিদিন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে যাচ্ছি আমরা। কোনো বৃহৎ জনসভা নয়। বৃহৎ জনসভা করবার অর্থ নেই। পথসভাও করবার অর্থও নেই। গ্রামে গ্রামে গিয়ে তারা বৈঠকী সভা করছেন। এই সভা গুলিতেই ইউনাইটেড ভূমিপুত্র পার্টির কথা তুলে ধরা হচ্ছে।
অধীর বাবু বলেন সকালে ভাত খেয়ে বের হবার পর ডিকিতে রুটি-তরকারি টিফিন বক্সে আমরা নিয়ে চলি। ক্ষিদে পাওয়া মাত্রই রুটি তরকারি খেয়ে নিয়ে থাকি। তাছাড়া আমাদের বহু শুভার্থীর বাড়িতে দুপুরের খাবার ব্যবস্থা করেন। সেই খাবারও খাই। নির্বাচনী প্রচারে উত্তরবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল চিত্রের কথা যেমন তুলে ধরছি তেমনি স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল অবস্থার কথাও বলছি। চা বাগান কে ঘিরে সহায়ক শিল্প স্থাপনের উপর গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। করের বোঝা থেকে উত্তরবঙ্গ বাসীকে রক্ষা করবার জন্য গণ আন্দোলনের উপর গুরুত্ব দিচ্ছি।নির্বাচনী এজেন্ট বিমল বর্মন বলেন মোটর সাইকেলে চেপে বিস্তৃত এলাকা চষে বেড়ানো এক বিরল অভিজ্ঞতা। যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই বিপুল সাড়া পাচ্ছি।