অরুণ ঝা, ইসলামপুর: লোকসভা ভোট (Lok Sabha Election 2024) মানেই কোটি কোটি টাকার খেলা। অন্তত সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলের কাছে বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’। এরই মাঝে ভোটারদের কাছ থেকে অর্থসাহায্য চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস (Congress) প্রার্থীর কিউআর কোড ছড়িয়ে দেওয়া রায়গঞ্জ (Raiganj) আসনের ভোটযুদ্ধে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। কংগ্রেস প্রার্থী আলি ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর হাজার কোটির প্রার্থীর বিজেপি ও তৃণমূলের সামনে নিজেকে কপর্দকশূন্য ঘোষণা করে আমজনতার কাছে অর্থসাহায্যের আবেদন রেখেছেন। স্বভাবতই ভিক্টরের এই ব্যতিক্রমী কৌশল চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভিক্টর শুধু কিউআর কোডেই ক্ষান্ত থাকেননি। লোকসভা আসনের প্রতিটি গ্রামে তাঁর ছবির সঙ্গে তাঁর সমর্থনে যিনি পোস্টার বা ব্যানার তৈরি করবেন সেই ব্যক্তির ছবি সহ পোস্টার ভিক্ষাও শুরু করেছেন। রাজনৈতিক মহল বলছে, ভিক্টর এক ঢিলে দুই পাখি মারার কৌশল নিয়েছেন। কারণ দেশজুড়ে যখন ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে তর্জা তুঙ্গে। বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের সমস্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভিক্টরের অর্থ ভিক্ষা এই ইস্যুকে যেমন আরও উসকে দেবে। তেমনি অর্থ এবং পোস্টারের সাহায্য চেয়ে ভিক্টর জনসংযোগে নিজেকে এগিয়ে রাখার ছক কষে ফেলেছেন। খোদ ভিক্টর এই ইস্যুতে জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপির প্রতিহিংসার কথা স্বীকার করে নিলেও মূলত টার্গেট করেছেন তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীকে।
লোকসভার মতো ভোটে রায়গঞ্জ আসনে ভোটারদের কাছ থেকে প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর অর্থসাহায্য চাওয়ার নজির নেই বললেই চলে। প্রার্থী বা দল ভোটের সময় মোটা টাকা খরচ করে থাকে এমনটাই প্রচলন। ফলে গাঁটের জোর যার যত, তার সঙ্গে ভিড়ও তত বেশি আমজনতা এমনটাই দেখে এসেছে।
প্রার্থী ঘোষণার পর ভিক্টর যে কায়দায় একের পর এক বিলাসবহুল গাড়ির কনভয় নিয়ে রায়গঞ্জে ঢুকেছিলেন তা নিয়ে তৃণমূল সহ বিজেপি নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছিল। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, ভিক্টর এত টাকা কোথায় পেলেন? এর জবাবে ভিক্টর বলেন, ‘আমার কাছে টাকা থাকলে তো দেব? যাঁরা আমাকে ভােলাবাসেন তাঁরা নিজেরাই খরচ করে গাড়ির কনভয় নিয়ে ঢুকেছিলেন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থী রাজনৈতিকভাবে আমার সঙ্গে পেরে উঠবেন না। তবে তাঁদের টাকার সঙ্গে আমি পারব না। সেই কারণেই সাধারণ মানুষের এই লড়াইয়ে তাঁদের প্রতিনিধি হিসেবে কিউআর কোডের মাধ্যমে অর্থসাহায্য চাইছি। পোস্টার চাইছি। টাকা ছাড়া ভোট পাওয়া যায় না আমি এই ধারণা বদলের চেষ্টা করছি। মানুষ আগ বাড়িয়ে সাড়াও দিচ্ছেন।’
এখন দেখার, ভিক্টরের কিউআর কোড নাকি প্রতিপক্ষের কোটি কোটি টাকার নোট, শেষ হাসি রায়গঞ্জ আসনে কে হাসবে।