মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: দেশ বিবর্ণ হয়ে আসছে। আক্রান্ত গণতন্ত্র, বিচার ব্যবস্থা ও সংবিধান। শনিবার শিলিগুড়িতে নাগরিক মঞ্চের আলোচনা সভায় এমনই মন্তব্য করলেন বাদশা মৈত্র(Badshah Moitra), ইমানুল হক। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি সরকারের একাধিক নীতির সমালোচনায় সরব হন তাঁরা। আলোচনা সভায় কোনও রাজনৈতিক দলের নাম নেওয়া হয়নি। কিন্তু বক্তাদের আক্রমণের লক্ষ্য ছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকেই। প্রসঙ্গত, ‘আক্রান্ত সংবিধান–বিপন্ন গণতন্ত্র–আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক ‘শিলিগুড়ির গণতন্ত্রপ্রিয় নাগরিকদের’ ডাকা শিলিগুড়ির কলেজপাড়ার বাঘা যতীন অ্যাথলেটিক ক্লাবের হলঘরে আলোচনা সভায় রাজ্যের বর্তমান তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধেও বহু বক্তা সরব হন।
এদিন সভায় আহ্বায়কদের পক্ষে শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তুলে ধরেন। এরপরই বক্তব্য শুরু করেন লেখক–সাংবাদিক ইমানুল হক। ম্যাক্সিম গোর্কির রাষ্ট্র ব্যবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রাষ্ট্রক্ষমতা প্রয়োগ করে দেশে বিভাজনের রাজনীতি হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষানীতির নামে শিক্ষার ধ্বংসের পথ সুগম হচ্ছে। সংবিধান লঙ্ঘন করে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।’ নাগরিকত্ব আইন নিয়েও বিষোদ্গার করেন তিনি। প্রায় একই সুরে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র। তাঁর কথায়, ‘দেশের বেশিরভাগ মানুষকে বঞ্চিত করে সামান্য কয়েকজন পুঁজিবাদীকে আরও বড়লোক করে তোলার চেষ্টা চলছে। বিচার ব্যবস্থা, সংবাদমাধ্যম, আইন সবকিছুই আক্রান্ত হচ্ছে। এতেই প্রমাণিত, গণতন্ত্রও আক্রান্ত।’ এব্যাপারে ‘রাষ্ট্র যখন দায়িত্ব পালন করে না তখন নিজেদেরই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’, বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বক্তব্যে বারবার নাগরিক দায়িত্ব পালনের কথা মনে করিয়ে দেন বাদশা।
এদিন সভায় শিলিগুড়ির বহু পরিচিত বাম–কংগ্রেস মনস্ক মুখকে সভায় দেখা যায়। এঁদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য অশোক ভট্টাচার্য, তাপস সরকার, তাপস গোস্বামী প্রমুখ। অধ্যাপক অমিতাভ কাঞ্জিলাল, ডাঃ সুবল দত্ত, আইনজীবী দিবাকর রায় সহ শিলিগুড়ির সুশীল নাগরিক সমাজের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। যদিও আলোচনায় শহরের তরুণ মুখের অংশগ্রহণ ছিল কম।