Saturday, May 18, 2024
HomeExclusiveAlipurduar | শতায়ু শিরীষই শিশুবাড়ির ‘এয়ার কুলার’

Alipurduar | শতায়ু শিরীষই শিশুবাড়ির ‘এয়ার কুলার’

মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, রাঙ্গালিবাজনা: বৃক্ষ তোমার নাম কী? ফলেই পরিচয়। দেখেই শ্রদ্ধা হয় এমনই মনোভাবের প্রতীক। বয়সে ‘বৃদ্ধ’। অতীতের নানা ইতিহাসের সাক্ষী। কয়েক তলা ইমারতের সমান উঁচু শিরীষ গাছটার সঠিক বয়স জানেন না এলাকার প্রবীণরাও। তবে বয়স যে একশো বছরেরও বেশি তা একবাক্যে মানছেন সবাই। আর মানছেন তার শীতল পরশই তার পরিচয়। আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের শিশুবাড়িহাটে ঢোকার মুখে তিন মাথার মোড়টার নাম গাছটার নামে হয়ে গিয়েছে শিরীষতলা। গ্রীষ্মকালে গাছতলাটাই যেন মরূদ্যান। ঠাঠা রোদ্দুরে ক্লান্ত মানুষদের দিনভর জটলা গাছতলায়। স্থানীয়দের বক্তব্য, শিরীষ গাছটা শিশুবাড়ির ‘প্রাকৃতিক এয়ার কুলার’।

সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ শিশুবাড়িতে তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি। বেলা ২টো নাগাদ তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়াল ৩৬ ডিগ্রি। গাছতলায় বসে অনেকেই। পাশেই ছোটু দাসের দোকান। ছোটু বললেন, ‘একটু দূরের তাপমাত্রা আর গাছতলার তাপমাত্রার বিরাট ফারাক। গরমেও আমরা অনেক আরামে রয়েছি গাছতলায়।’ গাছতলায় বসে দিনভর মোবাইল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে উঠতি বয়সিরা। গাছতলাতেই রয়েছে মন্দির। মন্দির ঝাঁট দিতে দিতে সূজন সূত্রধর বললেন, ‘প্রচণ্ড গরমে একপ্রকার এয়ার কুলারের কাজ করছে শিরীষ গাছটা।’

গাছটিকে নিয়ে জড়িয়ে রয়েছে নানা স্মৃতি। এলাকার প্রবীণদের শৈশব কেটেছে এই গাছটির প্রাকৃতিক স্পর্শেই। এলাকার ক্ষমা বসাকের বয়স ৫৫ বছর। অনুভব দিয়ে তিনি বললেন, ‘শৈশব থেকেই দেখে আসছি গাছটা। আমরা যখন শিশু ছিলাম, গাছটা তখনই অনেক বড় ছিল। গাছটার বয়স সম্ভবত ১০০ বছরেরও বেশি। প্রচণ্ড গরমে গাছতলায় বসে জিরিয়ে নেওয়া যায়।’ এলাকর প্রবীণরা অনেকেই শৈশবেই গাছটিকে বড় অবস্থায় দেখেছেন বলে জানান। আবার ব্রিটিশ আমলের গাছটিকে আকারে বড় হতে দেখেছেন এলাকার রাজকুমার লাখোটিয়া। স্মৃতিচারণ করে তিনি বললেন, ‘আমার বয়স ৬৫ বছর। আমিও শৈশব থেকে দেখে আসছি গাছটাকে। এটা ব্রিটিশ জমানার গাছ। আমার পূর্বপুরুষ ব্রিটিশ জমানা থেকেই শিশুবাড়ির বাসিন্দা। শিশুবাড়িতেই আমার জন্ম। শৈশবেই দেখেছি গাছটা অনেক বড়। পরে আরও বড় হয়েছে। ডালপালাও ছড়িয়েছে।’

তবে গাছটা ক্রমেই হেলে পড়ছে। তাই চিন্তিত শিরীষতলার বাসিন্দা শিক্ষক মনোতোষ রায়। মনোতোষের কথায়, ‘উত্তরদিকের বেশ কিছু ডালপালা শুকিয়ে গিয়েছিল। সেগুলি কেটে ফেলা হয়। দক্ষিণদিকে অনেক ডালপালা রয়েছে। তাই গাছটি ডালপালার ভারে দক্ষিণদিকে হেলে পড়ছে। কয়েক বছর আগে বনকর্মীরা এসে পরীক্ষা করে ওই সময়ে জানান, গাছের গোড়ার ভেতরের অংশটি ফাঁপা হয়ে গিয়েছে। ফলে ঝড়ে গাছটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে।’ গাছটিকে সংরক্ষণের প্রয়োজন মনে করছেন সবাই। তাঁদের এই অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজকুমার। বললেন, ‘গাছটি রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা দরকার। সেক্ষেত্রে দু’একটি ডাল কেটে গাছটির ভার কমানো যেতে পারে। কারণ গাছটি আমাদের কাছে একটি অমূল্য সম্পদ।’

Sushmita Ghosh
Sushmita Ghoshhttps://uttarbangasambad.com/
Sushmita Ghosh is working as Sub Editor Since 2018. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Digital. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img

LATEST POSTS

Hardik Pandya Banned | মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে দুঃসংবাদ! পরের আইপিএলে দলের প্রথম ম্যাচে নির্বাসিত হার্দিক

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: একে তো ঘরের মাঠে লখনউ সুপার জায়ান্টসের (Lucknow Super Giants) কাছে পরাজয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians)। পাশাপাশি পয়েন্টস টেবিলে একেবারে...

Bus Accident | চাকুলিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় মৃত ২, আহত চার বাংলাদেশি সহ ১৩

0
কানকি: মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় (Bus Accident) মৃত্যু হল ২ জনের। আহত চার বাংলাদেশি সহ ১৩ জন। চাকুলিয়া (Chakulia) থানার কানকি ফাঁড়ির ২৭ নম্বর জাতীয়...

Bus catches fire | যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে আগুন, পুড়ে মৃত্যু ৮ জনের, আহত বেশ...

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: যাত্রীবোঝাই চলন্ত বাসে আগুন (Bus catches fire) লেগে মৃত্যু হল ৮ জনের। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি...

West bengal weather update | রাজ্যের সাত জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা, জেনে নিন বিস্তারিত…

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মাঝে ক’দিন স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে বঙ্গে। ফলে তীব্র গরম থেকে কিছুটা রেহাই পেয়েছিল বঙ্গবাসী। ফের পারদ চড়তে শুরু করায় বাড়ছে...

NBMC | দালাল ধরে টাকা দিতেই হাতে এল মৃত্যুর শংসাপত্র! তদন্তের আশ্বাস মেডিকেল সুপারের...

0
শিলিগুড়িঃ মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে ১৫০০ টাকা দিতে হল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। যে পরিবার মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে দেড় মাস ধরে ঘুরছিল, সেই পরিবারই...

Most Popular