মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, বীরপাড়া: জন বারলা (John Barla) মনোজকে ‘ভাই’ সম্বোধন করে তাঁর হয়ে প্রচারে নামার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে বারলার অনুগামীরা মনোজকে জমি ছাড়তে নারাজ। বারলার বিদ্রোহের রেশ এখন চা বলয়ে। এঁদের একটা বড় অংশ বিজেপির (BJP) চা শ্রমিক সংগঠন বিটিডব্লিউইউয়ের সদস্য। পরিস্থিতি এমনই যে, রবিবার সন্ধ্যায় মেটেলি চা বাগানে সাংবাদিক বৈঠকে পদ্ম নেতৃত্ব, বিশেষ করে মনোজ টিগ্গার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় বিটিডব্লিউইউ নেতৃত্ব। পরিস্থিতি আঁচ করে আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) দ্বিতীয় দফার প্রচারাভিযান শুরুই করেনি গেরুয়া শিবির।
দলীয় সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারে বিজেপির দ্বিতীয় দফার প্রচার হবে সম্পূর্ণভাবে চা বাগানকেন্দ্রিক। শীঘ্রই নাগরাকাটা থেকে চা বলয়ে প্রচারে নামা হবে, জানান বিজেপি প্রার্থী তথা জেলা সভাপতি মনোজ টিগ্গা। তবে পরিস্থিতি বলছে, বারলা মুখ খোলার পর হোঁচট খেয়ে মনোজ এখন জল মাপছেন। কেবলমাত্র মৌখিক আশ্বাসে ভরসা না করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে একেবারে বগলদাবা করে চা বাগানে ঢুকতে চাইছেন তিনি।
রবিবার দিনভর বাড়িতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে বিকেলে কলকাতা পাড়ি দেন মনোজ। ফেরেন মঙ্গলবার। এদিকে বারলাও দিল্লিতে। সেখানে জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এখন মনোজ ও বারলার মধ্যে কে কোন ছক কষছেন, তা নিয়ে ধন্দে দলের কর্মীরাই।
আলিপুরদুয়ারে ২০১৯ সালে ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৯৮৯ ভোটে জেতেন জন বারলা। মূলত চা শ্রমিকদের ভোটেই এগিয়ে ছিলেন তিনি। আর এ নিয়ে বারবার অঙ্ক কষতে হচ্ছে মনোজকে। বিটিডব্লিউইউ সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের ১১৬টি চা বাগানের মধ্যে ১১২টি বাগানে সংগঠন রয়েছে তাদের। অথচ বিজেপির কাছে উপযুক্ত মর্যাদা না পেয়ে বেঁকে বসেছে ওই সংগঠনের একটি অংশ। ফলে এই মুহূর্তে ড্যামেজ কন্ট্রোলে মরিয়া পদ্ম শিবিরের রাজ্য নেতারা।
সোমবার মেটেলিতে বিটিডব্লিউইউ নেতৃত্ব অভিযোগ করে, চা শ্রমিক সংগঠনকে গুরুত্ব না দিয়ে মণ্ডল সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে চলছে বিজেপি। তাদের ক্ষোভ মেটাতে এগিয়ে যাননি মনোজও। বৈঠকে ছিলেন জন বারলার ভাই ভিক্টর বারলা। বৈঠকের পর বিটিডব্লিউইউয়ের সাধারণ সম্পাদক তফিল সোরেন জানান, অনুমতি ছাড়া বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে সংগঠনের (বিটিডব্লিউইউ) কেউ বৈঠক বা প্রচারে গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনোজ অবশ্য ঢোঁক গিলে বলছেন, ‘কয়েকজন অভিমান করেছেন। তবে খুব তাড়াতাড়ি আমরা একসঙ্গে প্রচারে নামব।’