শিলিগুড়ি: অনুমতি না নিয়ে শিলিগুড়ির স্টেশন ফিডার (এসএফ) রোডের গাছ কাটার অভিযোগে পূর্ত দপ্তরকে জরিমানা করল বন দপ্তর। অভিযোগ, বন দপ্তরকে না জানিয়ে নিজেরাই মার্কিং করে ২০টি গাছের ডালপালা ছাঁটাই করে অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছে পূর্ত দপ্তর। মানা হয়নি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকলও (এসওপি)।
এদিকে, গোটা বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হতে তড়িঘড়ি এসএফ রোডের গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব। মেয়রের বক্তব্য, ‘আপাতত গাছ কাটার কাজ বন্ধ রাখা হচ্ছে। পুরনিগমের ফ্রি পার্কিং এলাকায় যে সমস্ত গাছ রয়েছে, সেগুলি কাটা হবে না।’
এদিকে, পরিবেশপ্রেমীরা চাপ দিতে শুক্রবার রাতে সমস্ত পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে পুরনিগমের নদী ও পরিবেশ বিষয়ক বিশেষ কমিটি গঠন করেন গৌতম। এবার নতুন করে সমীক্ষা করে অনুমতি নিয়ে তবেই গাছ কাটা বা স্থানান্তরিত করতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বন দপ্তর। অভিযোগ, স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতিকেও এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। গাছ কাটার বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন বৃহত্তর শিলিগুড়ি খুচরা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রায় মুহুরি। শিলিগুড়ি পুরনিগম এই কাজের দেখাশোনা করছে। সারুগারার রেঞ্জ অফিসার স্বপনকুমার রাউতের কথায়, ‘আমরা বলে দিয়েছি, এভাবে অনুমতি না নিয়ে কোনও গাছ কাটা যাবে না। যেগুলি কাটা হয়েছে, সরকারি দরে সেগুলোর জরিমানা দিতে হবে।’
অন্যদিকে, যে ২০টি গাছ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, সেই প্রতিস্থাপনের পদ্ধতিও পুরোপুরি অবৈজ্ঞানিক বলে অভিযোগ। কোনও মতে গাছ তুলে নিয়ে নদীর ধারে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে কেউ বুঝতে না পারে সেজন্য নাকি গাছ তোলার পর তড়িঘড়ি গর্তগুলি বুজিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। পরিবেশপ্রেমী কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, ‘সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাজ করা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা হাইকোর্টে যাব।’ পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসু অবশ্য জানান, মেয়রের বৈঠকের পর একটা কমিটি তৈরি হচ্ছে। রিভিউ হওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করব।
এসএফ রোড থেকে এভাবে গাছ কাটলে বা অন্যত্র সরালে, তার প্রভাব এলাকার বাস্তুতন্ত্রের ওপর পড়বে বলে মনে করছেন বনকর্তারা। যে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ওই গাছগুলিকে সরানো হয়েছে, তাতে সব গাছ বাঁচানো সম্ভব নয়।