অমিতকুমার রায়, হলদিবাড়ি: হলদিবাড়ি নেতাজি সুভাষ মহাবিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে হলদিবাড়িতে। অভিযোগ, নেট, সেট কোয়ালিফাইড ও পিএইচডি স্কলার থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র এমএ (M.A) পাশ পরীক্ষার্থীকে অতিথি শিক্ষক (Guest Lecturer) হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রেও কোনও নিয়ম মানা হয়নি। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলার (Vice Chancellor) থেকে শুরু করে চ্যান্সেলার সিভি আনন্দ বোস, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। চ্যান্সেলার তথা রাজ্যপালের তরফে ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে তিনজন অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে হলদিবাড়ি নেতাজি সুভাষ মহাবিদ্যালয়। কলেজ সূত্রে খবর, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কলেজ পরিচালন কমিটির মিটিংয়ে বাংলা ও দর্শন (Philosophy) বিষয়ে তিনজন গেস্ট টিচার নিয়োগ করা হয়। দুজন বাংলা বিষয়ে ও একজন দর্শন বিষয়ের শিক্ষক নেওয়া হয়েছে। পিএইচডি স্কলার দীপশিখা সরকারের বক্তব্য, অতিথি শিক্ষক নিয়োগের জন্য কলেজের তরফে কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রেও ইউজিসি’র (UGC) গাইডলাইন মানা হয়নি।’
আর ইউজিসি’র গাইডলাইন (Guideline) না মেনে শিক্ষক নিয়োগ করায় ক্ষুব্ধ হন পিএইচডি স্কলার (PhD Scholar) সহ নেট, সেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। তাই তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে মিলিতভাবে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে লিখিতভাবে নালিশ জানান।
অভিযোগকারী প্রসেনজিৎ বর্মনের কথায়, কলেজ সংলগ্ন এলাকায় নেট, সেট কোয়ালিফাইড ও পিএইচডি স্কলার প্রার্থী থাকলেও শুধুমাত্র এমএ পাশ এমন প্রার্থীদের নিয়োগ (Recruitment) করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আগেও একইভাবে নিয়ম না মেনে দুজন অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে।’ একই সুর প্রতিবাদী চিরঞ্জিৎ বর্মনের গলায়। তাঁর মন্তব্য, ‘ভাইভা ছাড়াই পরিচালন কমিটি মিটিং করে নিজেদের পছন্দমতো ব্যক্তিদের নিয়োগ করেছে।’
এইভাবে বেনিয়মে নিয়োগ করায় কলেজের শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকবে এমন আশঙ্কা করে কলেজ পড়ুয়ারা আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ছাত্র নেতা কপিল বর্মন বলেন, ‘এমন অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। অযোগ্যদের নিয়োগের ফলে শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকবে। ভাষা দিবসের পরে এই বিষয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’ আরেক ছাত্র নেতা নিলু হকের বক্তব্য, ‘বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে নিয়োগ মানেই দুর্নীতি। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে এই সরকার।’
এদিকে নিয়োগের সময় দায়িত্বে থাকা কলেজের তৎকালীন পরিচালন কমিটির সভাপতি সৌরভ রায় ওরফে পিয়াল বলেন, ‘কলেজের শিক্ষার মানের কথা ভেবে যোগ্যদের নিয়োগ করা হয়েছে। তবে এলাকায় দুঃস্থ ও গরিব প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’