চাঁচলঃ মশলা শেষ হয়ে গিয়েছিল তাই মুড়ি দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা (Jhalmuri seller)। আর ঝালমুড়ি না পেয়ে বেজায় চটে গেলেন এলাকার মস্তান (miscreant)। রাগে হাঁসুয়ার কোপ (sharp weapon) বসিয়ে দিলেন ঝালমুড়ি বিক্রেতার মাথায়। গ্রামে গ্রামে সাইকেলে করে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন চাঁচলের (Chanchal) কিসমতপুরের যুবক সাইদুল ইসলাম (২৬)। তার সুমিষ্ট হাঁকডাকে বাড়ি থেকে বাচ্চারা বেরিয়ে আসে ঝালমুড়ি কেনার জন্য। সারাদিন সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে এই ভাবেই ঝালমুড়ি বিক্রি করেন তিনি। এই ঝালমুড়ি বিক্রি করতে গিয়েই মস্তানের হাতে প্রাণ (Attempted murder) যেতে বসেছিল এই বিক্রেতার।
প্রত্যেকদিনের মতো মঙ্গলবারও তিনি সকালে বেরিয়েছিলেন ঝালমুড়ি বিক্রি করতে। দুপুরের দিকে তিনি ছিলেন চাঁচল ২ নং ব্লকের জালালপুর গ্রামে। সেই সময় এলাকার যুবক মনিরুল ইসলাম ঝালমুড়ি কেনার জন্য আসেন। বাড়ি থেকে ঝামেলা করে আসায় প্রথম থেকেই মনিরুলের মেজাজ ছিল সপ্তমে। ঝালমুড়ি বিক্রেতার অভিযোগ, তার কাছে মসলা শেষ হয়ে যাওয়াই তিনি জানান মুড়ি দিতে দেরি হবে। মনিরুল দাবি করেন মুড়ি না দিলে তাকে টাকা দিতে হবে। এহেন অদ্ভুত দাবি শুনে হতচকিত হয়ে পড়েন ওই ঝালমুড়ি বিক্রেতা। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে প্রথমে তাকে কিল, চড়, ঘুসি মারা শুরু করে বলে অভিযোগ। তারপরেই মাথায় হাঁসুয়ার কোপ বসিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ঝালমুড়ি বিক্রেতা সাইদুল। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানেই চিকিৎসাধীন ওই ঝালমুড়ি বিক্রেতা।
এই ঘটনায় চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্তের বাবা মংলু শেখ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে চাঁচল থানার পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত যুবক এলাকায় বদমেজাজি মস্তান হিসেবে পরিচিত। এদিন বাড়িতে ঝামেলা হয়েছিল তার। সেই রাগ গিয়ে পড়ে অসহায় ঝালমুড়ি বিক্রেতার উপর। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য দিলওয়ার হোসেন বলেন, “আমি এলাকায় গিয়ে জানতে পারি নৃশংসভাবে হাঁসুয়ার কোপ দিয়ে একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতাকে প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছে। স্থানীয়রাই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এই ঝালমুড়ি বিক্রেতাকে অভিযুক্ত আগে থেকে চিনত না। এলাকার মানুষ বলছে প্রথমে মুড়ি চেয়েছিল তারপর টাকা। না দেওয়াতে এই কাণ্ড ঘটিয়ে বসে।”
আক্রান্তের বাবা মংলু শেখ বলেন, “আমাদের অভাবের পরিবার। ছেলে গ্রামে গ্রামে ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালায়। আজ এইভাবে আক্রান্ত হল। মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। চিকিৎসার টাকা আমরা কোথায় পাব। অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”চাঁচল থানার পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সমগ্র ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।