গাজোল: বাঁশির সুরের সঙ্গে মাদলের বোল, আর তার সঙ্গে আদিবাসী রমণীদের ছন্দবদ্ধ নাচ। এভাবেই মেতে উঠছে মালদা জেলার গাজোল ব্লকের বিভিন্ন আদিবাসী গ্রাম। কেননা শুরু হতে চলেছে তাঁদের প্রিয় বাঁধনা পরব। মাঘী পূর্ণিমার রাতে বিভিন্ন এলাকার মাঠে একত্রিত হবেন এলাকার আদিবাসীরা। সেখানে চাঁদের আলোয় সারারাত ধরে চলবে নাচ-গান আর খাওয়া দাওয়া। তার আগেই বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে শুরু হয়েছে বাঁধনা পরবের প্রস্তুতি। চলছে বাড়িঘর নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলার কাজ। এ কাজে মূলত হাত লাগিয়েছেন বাড়ির মহিলারা। সঙ্গে চলছে আদিবাসীদের প্রিয় পানীয় হাঁড়িয়া তৈরির প্রস্তুতিও।
এদিন গাজোলের আদিবাসী অধ্যুষিত জামডাঙা, দুর্গাপুর, খিড়কি ডাঙা প্রভৃতি গ্রামগুলিতে গিয়ে দেখা গেল জোরকদমে চলছে বাঁধনা পরবের প্রস্তুতি। নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলা হচ্ছে আদিবাসীদের সুদৃশ্য মাটির বাড়িগুলি। মূলত নীল রং এবং নীচে লালমাটির রংয়ের বর্ডার দিয়ে বাড়িগুলি রাঙিয়ে তোলা হচ্ছে। প্রথাগতভাবে বিভিন্ন ধরনের লতাপাতা, ফুল এই ছবির পাশাপাশি দেওয়ালে আঁকা হচ্ছে আধুনিক ডিজাইনের নানা ধরনের ছবি। কোথাও আঁকা হয়েছে আদিবাসী রমণীদের নাচের ছবি। আবার কোথাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গাছের নীচে বংশীবাদক সাঁওতাল যুবকের ছবি।
আদিবাসী যুবক অমল মুদি বলেন, ‘মূলত ফসল কাটার পর আদিবাসীরা মেতে ওঠে বাঁধনা পরবে। শনিবার থেকে শুরু হবে আমাদের উৎসব। প্রথম প্রথম আমরা নিজেদের পাড়ায় গ্রামের রাস্তায় নাচ গান করব। এরপর যাব অন্যপাড়ায় নিজেদের নাচ-গান পরিবেশন করতে। একইভাবে অন্যপাড়ার আদিবাসীরাও আসবে আমাদের পাড়াতে। প্রতিদিন দুপুরে এবং রাতে চলবে নানা ধরনের খাওয়া দাওয়া। মাঘী পূর্ণিমার রাতে চাঁদকে পুজো করব আমরা।‘