নয়াদিল্লি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সারা দেশের মধ্যে বাণিজ্য বান্ধব রাজ্য হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকরণের ক্ষেত্রে সারা দেশকে পথ দেখাবে বাংলাই। দিল্লির প্রগতি ময়দানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পশ্চিমবঙ্গ প্যাভিলিয়নের উদ্বোধনে এসে এমনটাই বললেন রাজ্যের শিল্প, বাণিজ্য উদ্যোগ এবং মহিলা, শিশু উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী শশী পাঁজা। জানালেন, রাজ্যে কর্মসংস্কৃতি দ্রুত ফিরিয়ে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পে বিনিয়োগ করার জন্য এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ কতটা সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে সেই প্রসঙ্গে তিনি জানান, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে তৃতীয়বারের জন্য গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত স্থায়ী সরকার। শিল্পের জন্য সহায়ক হিসেবে এই মুহূর্তে রাজ্যে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ, জল এবং উন্নত পরিকাঠামো সবই রয়েছে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে তৃতীয় বৃহত্তম সড়ক পরিকাঠামো। এসকল বিন্দুগুলি বাণিজ্যের জন্য বিশেষ সহায়ক বলে জানান শশী পাঁজা।
মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ৪২তম ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে এসে শশী পাঁজার দাবি, পশ্চিমবঙ্গ প্যাভিলিয়নের মাধ্যমে বাংলা তার শিল্প, সাহিত্য এবং ঐতিহ্যকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চলেছে। তিনি বলেন, ‘ডানকুনি-কল্যাণী, ডানকুনি-রঘুনাথপুর এবং ডানকুনি-হলদিয়ায় যে বাণিজ্য করিডর গড়ে উঠেছে তা আগামীদিনে বাংলাকে শিল্পবান্ধব হওয়ার দিকে আরও এগিয়ে দেবে। তবে তাঁর অভিযোগ, বাংলা সম্পর্কে সারাদেশের কাছে একটা নেতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলা হয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলা সেই তকমা কাটিয়ে অনেক আগেই বেরিয়ে এসেছে। রাজ্যে শীঘ্রই চালু হতে চলেছে তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর। এশিয়ার বৃহত্তম কোল্ড মাইন দেউচা পাচামিও রয়েছে বাংলায়। বিরোধীরা যখন অভিযোগ করছে রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতি ক্রমশ মুখ থুবড়ে পড়েছে, তখন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী রাজধানীতে এসে বোঝাতে চাইলেন এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ কতটা শিল্প উপযোগী। সিঙ্গুর প্রসঙ্গে তাঁর মত, সেখানেও ইতিবাচক কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, আগামী ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে দিল্লির এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা, এবারের থিম ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’। পশ্চিমবঙ্গ প্যাভিলিয়নের মধ্যে রয়েছে মোট ১৭টি স্টল। যার মধ্যে ৯টি মাঝারি এবং ক্ষুদ্র শিল্প এবং ৭টি স্টল তথ্য অনুসন্ধান এবং টুরিজমকে নিয়ে। নকশি কাথার সূক্ষ্ম কাজ থেকে শুরু করে, বিষ্ণুপুরি বালুচরি, শান্তিনিকেতনের চামড়ার ব্যাগ থেকে ঘর সাজানোর হরেক জিনিস স্থান পেয়েছে এখানে। বাংলার কুটির শিল্প থেকে খাদ্যদ্রব্য সবই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্যাভিলিয়নে। রয়েছে জিআই অনুমোদন পাওয়া রাজ্যের ২২টি সামগ্রীও। পশ্চিমবঙ্গ প্যাভিলিয়নে রয়েছে বিশ্ব বাংলার স্টল, বাংলার নিজস্ব তন্তুজ, মঞ্জুষা, খাদি এবং রেশম শিল্পের স্টল। সবকটি স্টল এদিন ঘুরে দেখেন শশী পাঁজা, সঙ্গে ছিলেন দপ্তরের স্পেশাল সেক্রেটারি সুমিতা বাগচী এবং অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি সোনালী দত্তরায়। বাউল গান ও ঢাক বাজিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় রাজ্যের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যকে।