মানিকচক: অনূর্ধ্ব ১৭ জাতীয় ভলিবল দলে নির্বাচিত হল মানিকচক শিক্ষানিকেতনের নবম শ্রেণির ছাত্র বিকি মণ্ডল। এই খবর গ্রামে এসে পৌঁছোতেই উৎসবের আমেজ মানিকচকজুড়ে। জাতীয় দলে নির্বাচনের সমস্ত কৃতিত্ব ওই স্কুলের শরীর শিক্ষা বিষয়ক স্যারকেই দিয়েছেন বিকি। জাতীয় দলের সদ্য নির্বাচিত বিকি মণ্ডলের কথায়, ‘শুধুমাত্র নিলয় স্যারের জন্যই আমার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয়েছে।‘
বিকি মণ্ডলের বাড়ি মানিকচকের সিং পাড়ায়। বিকির বাবা অমর মণ্ডল ভিনরাজ্যে টোটো চালান। মা অনিমা মণ্ডল গৃহিণী। ছোট থেকেই বিকির খেলাধুলার খুব শখ। ফুটবল ক্রিকেট ভলিবল সবই খেলতো বিকি। বিকির দাবি, তাঁদের স্কুলে নিলয় মিশ্র যোগদান করার পর থেকে খেলাধুলায় তাঁর অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। তাঁর খেলা দেখে নিলয়বাবু তাঁকে ভলিবল খেলার প্রতি বেশি করে গুরুত্ব দিতে বলেন। সপ্তম শ্রেণি থেকেই বিকি ভলিবল খেলতে শুরু করে। স্কুল ভলিবল টিমের হয়ে খেলা শুরু করে সে। তারপর আর থেমে থাকেনি। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন জেলার হয়ে বিভিন্ন ভলিবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। নিজ দক্ষতায় সুযোগ পায় রাজ্য দলে। চলতি বছরে তামিলনাড়ু ও কোচবিহারে রাজ্যের হয়ে খেলে বিকি। গত সপ্তাহে মানিকচক শিক্ষা নিকেতনের শরীর শিক্ষা বিষয়ক স্যার নিলয় মিশ্র খবর পান কলকাতায় অনূর্ধ্ব ১৭ ভারতীয় জাতীয় ভলিবল দলের জন্য নির্বাচন চলছে। খবর পেয়ে দুই ছাত্র বিকি মণ্ডল ও অনিক মণ্ডলকে নিয়ে কলকাতা ছুটেন। চলে নিজ দক্ষতা প্রদর্শনকারী ভলিবল প্রতিযোগিতা। আর সেই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জাতীয় ভলিবল দল নির্বাচকরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে মোট ১৮ জন খেলোয়ারকে জাতীয় দলের জন্য নির্বাচন করেন। সেই ১৮ জনের মধ্যে জায়গা করে নেয় বিকি।
জানা গিয়েছে, পুজোর পর সমস্ত রাজ্য থেকে নির্বাচিত খেলোয়াররা জম্মু ও কাশ্মীরের একটি ভলিবল ক্যাম্পে যোগদান করবেন এবং সেই ক্যাম্পে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজের দক্ষতায় অনূর্ধ্ব ১৭ জাতীয় দলের জন্য জায়গা দখল করে নেবে। বিকির মা অনিমা দেবী বলেন, ‘আমি কোনও দিন বিকির খেলা দেখিনি। সবাই বলে আমার ছেলে নাকি খুব ভালো ভলিবল খেলে। আমি চাই আমার ছেলে যেন জাতীয় দলের হয়ে খেলে দেশের নাম আরও উজ্জ্বল করে।‘
রাজ্য দলের হয়ে একসময় খেলতেন শিক্ষক নিলয় মিশ্র। তিনি বলেন, ‘সমস্তটাই বিকির প্রতিভা। আর বিকি তাঁর প্রতিভার জোরে ভারতীয় জাতীয় দলে অবশ্যই স্থান করে নেবে।‘