Friday, May 10, 2024
Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গদৃষ্টিহীন শিক্ষকই আলো দেখাচ্ছেন শ্রুতিদের

দৃষ্টিহীন শিক্ষকই আলো দেখাচ্ছেন শ্রুতিদের

নকশালবাড়ি: দুই চোখেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। তবে হার মানতে শেখেননি তিনি। জীবনে যতই প্রতিকূলতা আসুক না কেন সবটাকেই জয় করেছেন। এগিয়ে গিয়েছেন নিজের মতো করে। দৃষ্টিহীন হওয়া সত্ত্বেও সমাজে শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছেন তিনি। দৃষ্টিহীন বলে অনেকেই তাঁর কাছে ছেলে মেয়ে পড়াতে চায়নি। কিন্তু সেই দৃষ্টিহীন শিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন শ্রুতি দাস, অঞ্জুলি প্রসাদ, অনিশা লাকড়ার মতো পড়ুয়ারা।

দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের যেমন তিনি নতুন দিশা দেখিয়েছেন তেমনি সাধারণ পড়ুয়াদের কাছে তিনি একজন অনুপ্রেরণা। চুক্তির ভিত্তিতে নকশালবাড়ি ব্লকের স্পেশাল এডুকেটর পদে তিনি কর্মরত। সপ্তাহের সাতদিন তিনি ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে বিশেষভাবে সক্ষম  ছাত্রছাত্রীদের পড়ান বছর ৫০-এর রাজকুমার নস্কর। নিজে দৃষ্টিহীন হওয়া সত্ত্বেও আর পাঁচজনের মতোই শিক্ষকতা করেন। তাও একেবারেই সাবলীলভাবে। দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে রথখোলায় থাকেন রাজকুমারবাবু। সেখানেই গৃ্হশিক্ষকতা করেন তিনি। এবার ৮ জনকে তিনি পড়িয়েছিলেন। তারা প্রত্যেকেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। যদিও রাজকুমারবাবু ইংরেজি বিষয় পড়ান। এদের মধ্যে শ্রুতি দাস মাধ্যমিকে ৬৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। ইংরেজিতে ৮১ নম্বর পেয়েছে। অন্যদিকে, উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ৩৩১ নম্বর পেয়েছে অনিশা লাকড়া। ইংরেজিতে পেয়েছে ৯০। কর্মসূত্রে নকশালবাড়িতে থাকতে হলেও রাজকুমারবাবুর আদি বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার মগরা ব্লকে।

রাজকুমার নস্কর জানান, ছোটো থেকেই তিনি মোটামুটি মেধাবী ছিলেন। কিন্তু দৃষ্টিহীনতা তাঁর কাছে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়নি। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার হলদিয়া বিবেকানন্দ মিশন ব্লাইন্ড স্কুল থেকে ১৯৯৫ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপরেই শুরু হয় জীবনসংগ্রাম। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় কলা বিভাগ নিয়ে গ্রামের বহরু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন।

এরপর ফকির চাঁদ কলেজ থেকে স্নাতক এবং বিএড করেন ২০০০ সালে। ২০০৩ সালে সর্বশিক্ষা মিশনে চুক্তি ভিত্তিতে ব্লকের স্পেশাল এডুকেটর পদের কাজ যোগদান করেন তিনি। নকশালবাড়ি ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে তিনি ব্রেইল পদ্ধতিতে শিক্ষা দান করছেন ছাত্রছাত্রীদের। ছাত্রী শ্রুতি দাস বলেন, ‘আমি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই ওনার কাছে ইংরেজি পড়তাম। স্যারের প্রতিবন্ধকতা কোনদিন আমাদের কাছে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তিনি ব্রেইলি পদ্ধতিতে পড়ালেও আমাদের বুঝতে কোনদিন অসুবিধা হত না। প্রশ্ন করলেও ভালো করে বুঝিয়ে দেন।‘

Sucharita Chanda
Sucharita Chandahttps://uttarbangasambad.com/
Sucharita Chanda is working as Sub Editor Since 2020. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img

LATEST POSTS

Bagdogra Airport | প্রবেশপথে লাইনে দাঁড়ানোর দিন শেষ, বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ চিনবে প্রযুক্তি

0
খোকন সাহা, বাগডোগরা: আর মাত্র মাসখানেকের অপেক্ষা। বাগডোগরা বিমানবন্দরে (Bagdogra Airport) প্রবেশের মুখে সচিত্র পরিচয়পত্র হাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার দিন ফুরোতে চলেছে। এবার থেকে...

North Bengal University | কলেজগুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়ার তোড়জোড়, কোর্সে বদল আনছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

0
শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: কলেজ স্তরের নয়া ভর্তিতে (College Admission) কোর্সের ক্ষেত্রে রদবদল করেছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (North Bengal University)। নতুন শিক্ষানীতি-২০২০ অনুযায়ীই (New Education Policy)...
water-crisis

Siliguri Water Crisis | শিয়রে জলসংকট, ট্যাংকার-পাউচ দিয়ে তেষ্টা মেটানোর মরিয়া চেষ্টা

0
ভাস্কর বাগচী ও রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: সাতসকালে কিছু ওয়ার্ডে জল মিলেছে বটে, কিন্তু বিকেল হতেই বদলে গেল ছবিটা (Siliguri Water Crisis)। ঘড়ির কাঁটায় চোখ...

Tufanganj | উচ্চমাধ্যমিকে তুফানগঞ্জের যমজ দুই ভাইয়ের নজরকাড়া ফলাফল ,মহকুমায় সম্ভাব্য প্রথম অমৃতাভ পাল

0
তুফানগঞ্জ: অল্পের জন্য উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় স্থান পেল না তুফানগঞ্জ নৃপেন্দ্রনারায়ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের যমজ দুই ভাই অঞ্জনাভ পাল ও অমৃতাভ পাল। তাদের প্রাপ্ত...

Worker death | হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ল চাঙর! সেবক-রংপো টানেলে ফের মৃত্যু শ্রমিকের

0
শিলিগুড়ি: সেবক-রংপো রেল প্রকল্পে কাজ চলাকালীন ফের এক শ্রমিকের মৃত্যুর (Worker death) ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ১ নম্বর টানেলে মারা যান প্রকল্পের কাজে যুক্ত...

Most Popular