বর্ধমানঃ সাত মাসও টিকল না বাম ও কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েতের বোর্ড। লোকসভা ভোটের আগেই মঙ্গলবার ঘাস ফুল ফুটে গেল পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) গলসি ২ নম্বর ব্লকের সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতে (Sanko gram panchayet)। এদিন বাম ও কংগ্রেসের জোট ছেড়ে সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিলেন সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিখা সাঁতরা ও সদস্য শেখ সাইদুল্লা। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে শামিল হতেই তৃণমূলে যোগদান বলে জানিয়েছেন দলবদলুরা। যদিও বিরোধীদের দাবি, তপন কান্দুরের মত পরিণতি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই দুই পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন।
সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৩ টি। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড দখলের জন্য পঞ্চায়েত ভোটের সময় ফরোয়ার্ড ব্লক ও কংগ্রেস প্রার্থীরা জোট বেঁধে ভোটে লড়েন। সফলতাও পায় জোট। ১৩ টি আসনের মধ্যে জোটের প্রার্থীরা ৭টি আসনে জয়ী হয়। আর ৬ টি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ফরোয়ার্ড ব্লক ও কংগ্রেস জোটের প্রার্থীরা মিলে সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেন। জোটের সদস্যরা মিলে ফরোয়ার্ড ব্লকের জয়ী প্রার্থী শিখা সাঁতরা কে প্রধান নির্বাচিত করেন। এর পর থেকে সাত মাস গড়াতে না গড়াতেই খান খান হয়ে গেল বাম-কংগ্রেস জোট। দুটি আসন বেড়ে মোট আসন সংখ্যা ৮ হয়ে যাওয়ায় গলসির সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েত চলে গেল তৃণমূলের দখলে।
শিখা সাঁতরা ও শেখ সাইদুল্লা এদিন বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের জন্যে আমাদের কেউ চাপ সৃষ্টি করে নি, হুমকিও কেউ দেয় নি। কংগ্রেস, সিপিএম, ফরোয়ার্ড ব্লক ও বিজেপি সদস্যদের নিয়ে আমাদের সাঁকো পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠিত হয়েছিল। সেই বোর্ডে আমরা উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারছিলাম না। তাই উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে শামিল হওয়ার জন্যে দিন কয়েক আগে আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করি। সেই আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় আমরা এদিন আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করি।”
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নানা অসুবিধার কারণে রেখা সাঁতরা পঞ্চায়েত পরিচালনা করতে পারছিলেন না। তাই উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে শামিল হতে ফরোয়ার্ড ব্লকের রেখা সাঁতরা ও কংগ্রেসের সদস্য শেখ সাইদুল্লা তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগদান করতে চেয়ে আবেদন করেন। দল সেই আবেদন মঞ্জুর করে। এদিন তাঁরা কাটোয়ায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে এসে তৃণমূলে দেন।
জানা গিয়েছে, রেখা সাঁতরাকে প্রধান পদে রেখেই ফের সাঁকো পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করবে তৃণমূল কংগ্রেসে। এমন আভাসও দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এ বিষয়ে জেলা কংগ্রেসের নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, “আমার মনে হয় না সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতের ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রধান ও কংগ্রেসের সদস্য স্বেচ্ছায় তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগ দিয়েছেন। মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়েই দু’জনকেই দলে টেনেছে তৃণমূল।”