বক্সিরহাট: লোকসভা ভোটের আগে শক্তিপ্রমুখ গঠনকে কেন্দ্র করে শালবাড়ি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির দলীয় কোন্দল চরমে উঠল। শুক্রবার তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তল্লিগুড়ি চৌপথি এলাকায় এনিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসায় স্বাভাবিকভাবে অস্বস্তিতে পড়েছে দল।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়লাভ করে বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে গত শনিবার শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে শক্তিপ্রমুখ কমিটি বদল করা হয়েছে। পুরোনোদের বদলে নতুন করে রামকৃষ্ণ দাস, অমল বর্মন, শুকদেব বর্মনের নাম ঘোষণা করেন বিজেপির তুফানগঞ্জ বিধানসভার ৩ নম্বর মণ্ডল সভাপতি প্রভাত বর্মন।
দলের বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে শক্তিপ্রমুখ গঠন করেছেন দলের মণ্ডল সভাপতি। এমনকি মোটা টাকার বিনিময়ে পুরোনোদের বঞ্চিত রেখে শক্তিপ্রমুখদের নাম ঘোষণা করেছেন মণ্ডল সভাপতি। শক্তিপ্রমুখ গঠনে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে তল্লিগুড়ি বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা। মণ্ডল সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে হরিপুর-কামাখ্যাগুড়ি সংযোগকারী রাজ্য সড়ক অবরোধ করেও প্রতীকী বিক্ষোভ দেখানো হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় বক্সিরহাট থানার পুলিশ।
বিজেপির প্রাক্তন শক্তিপ্রমুখ কল্যাণ ডাকুয়া জানান, শক্তিপ্রমুখ গঠনে স্বজনপোষণ করেছে দলের মণ্ডল সভাপতি। পুরোনো কমিটি বহাল রাখতে এবং মণ্ডল সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। লিখিত আকারে মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে দলের জেলা সভাপতির কাছে অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে স্বজনপোষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন বিজেপির ৩ নম্বর মণ্ডল সভাপতি প্রভাত বর্মন। তাঁর কথায়, প্রাক্তন শক্তিপ্রমুখ কল্যাণ ডাকুয়ার বিরুদ্ধে দলবিরোধী ও অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠায় তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। দলীয় কমিটিতে আলোচনার পর নতুন কমিটিতে তাঁকে রাখা হয়নি। এ ব্যাপারে বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
বিজেপির দলীয় কোন্দল ঘিরে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘বিজেপি দলটা সার্কাসে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলাতে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে তালা বন্ধ করে রেখেছিল দলীয় কর্মীরা। বিজেপি সাধারণ মানুষ এবং দলীয় কর্মীদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা তাঁরা পূরণ করতে পারেনি। তাই এবার থেকে দলের নেতা মন্ত্রীদের তালাবন্দি করে রাখবে বিজেপি কর্মীরা।’