রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: সমকাজে বেতন বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের (North Bengal Medical College) অধ্যক্ষের অফিসে বিক্ষোভ (Protest) দেখাল কনট্রাক্ট ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার ফোরাম। সংগঠনের অভিযোগ, একই পদের জন্য নিয়োগ করে মেডিকেলের অস্থায়ী কর্মীদের দু’রকমভাবে বেতন সহ অন্যান্য সুযোগসুবিধা দেওয়া হচ্ছে। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মীরা যে সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন, সুপারস্পেশালিটি ব্লকের কর্মীরা সেই হারে বেতন সহ অন্যান্য সুবিধা পাচ্ছেন না। অন্যান্য ক্ষেত্রেও অস্থায়ী কর্মীদের প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। সমস্ত কিছু নিয়েই এদিন স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ ডাঃ ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেছেন, ‘দাবিগুলি যথাস্থানে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে দীর্ঘদিন ধরে ২৮৪ জন সাফাইকর্মী অস্থায়ী হিসাবে কাজ করছেন। সাফাইকর্মী হিসাবে নিয়োগ হলেও বাস্তবে তাঁদের দিয়ে অফিসের সমস্ত কাজ করানো হয়। ওয়ার্ড মাস্টারের অফিস সামলানো, সেখানকার ফাইলপত্র দেখা, একাধিক বিভাগে ডেটা এন্ট্রি করা, সুপারের অফিস, রক্ত পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে শুরু করে অন্যান্য জায়গায় কাজ করছেন এই অস্থায়ী কর্মীরা। অথচ তাঁরা দৈনিক হাজিরা হিসাবেই মাসের শেষে বেতন পাচ্ছেন। একদিন কাজ না করলে সেদিনের হাজিরা তাঁর বেতন থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে। এই কর্মীদের সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিও দীর্ঘদিনের, যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। পাশাপশি কর্মী নিয়োগের টেন্ডার ঘিরে বিতর্কও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। দু’বছর আগে নিয়োগ করা এজেন্সি বাতিল করে নতুন এজেন্সি নিয়োগের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বর্তমান সংস্থা।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে ফের আন্দোলনে নামল অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠন। কনট্রাক্ট ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার ফোরামের সম্পাদক সজল দত্ত বলেন, ‘মেডিকেলে ২৮৪ এবং সুপারস্পেশালিটি ব্লকে ১০০ জন অস্থায়ী হিসাবে কাজ করছেন। মেডিকেলের কর্মীরা যে বেতন পাচ্ছেন, সুপারস্পেশালিটি ব্লকের কর্মীদের সেই তুলনায় কম বেতন দেওয়া হচ্ছে। অথচ একই বিভাগে নিয়োগ হয়েছে। এই বৈষম্য আমরা মানব না। সমকাজে সমবেতন দিতে হবে।’
সজলের দাবি, কিছু কর্মীকে আধিকারিকরা বেছে বেছে প্রাইজ পোস্টিং দিচ্ছেন। নিজের কাছের লোককে সুবিধা পাইয়ে দিয়ে বাকিদের দিয়ে বেশি সময় কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এটাও মানা হবে না। এই দাবি নিয়ে আমরা এর আগেও হাসপাতাল সুপারের কাছে দরবার করেছি। সেখানে কাজ না হওয়ায় কলেজ অধ্যক্ষের হস্তক্ষেপ চাইলাম। এতেও কাজ না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’