মহম্মদ হাসিম, নকশালবাড়ি: লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election) আগে সমগ্র শিক্ষা মিশনের সোশ্যাল অডিট (Social Audit) ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এর আগে ফান্ডের অভাব দেখিয়ে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের কোটি কোটি টাকার অডিট এখনও আটকে রয়েছে। তার ওপর শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার পুরনিগম এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের মোট ১০৪টি স্কুলে নতুন করে অডিটের নির্দেশিকা আসায় হইচই শুরু হয়েছে। যদিও শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার সমগ্র শিক্ষা মিশনের ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসার (District Education Officer) শ্রেয়সী ঘোষ বলেন, ‘আমরা সোশ্যাল অডিটের কোনও নির্দেশিকা এখনও পাইনি।’
জানুয়ারি মাসে রাজ্যের সামাজিক নিরীক্ষা বিভাগ থেকে সমগ্র শিক্ষা মিশনের বরাদ্দ করা টাকার ওপর সোশ্যাল অডিটের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এজন্য প্রতিটি ব্লকে গঠিত হবে এসএএফটি টিম অর্থাৎ সোশ্যাল অডিট ফেসিলিটেশন টিম। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই টিমের দায়িত্ব হবে এলাকার সমস্ত স্কুলে সমগ্র শিক্ষা মিশনের ওপর সোশ্যাল অডিট করা। সোশ্যাল অডিটের শিলিগুড়ি মহকুমার ডিস্ট্রিক্ট কোঅর্ডিনেটর (Coordinator) সঞ্জয় বসু জানান, চারটি প্রকল্পের সোশ্যাল অডিট ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। তার রিপোর্ট নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘তবে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন এবং সমগ্র শিক্ষা মিশনের সোশ্যাল অডিট হবে কি না, তা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। তবে সোশ্যাল অডিটের নির্দেশিকা ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ফেব্রুয়ারিতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত অডিটের শেষ সময়সীমা। স্কুলগুলিতে অডিট শেষ করে ব্লক হিয়ারিং, ডিস্ট্রিক্ট পাবলিক হিয়ারিংয়ে সমস্ত অডিট রিপোর্ট যাচাই করা হবে। তারপর ১৫ মার্চের মধ্যে রাজ্যের সোশ্যাল অডিট বিভাগে জমা করার নির্দেশ রয়েছে।
গতবছর গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন প্রকল্পের উপর সোশ্যাল অডিটের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই অডিটের জন্য রাজ্য ফান্ড (Fund) না দেওয়ায় আটকে যায়। এবারও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে খবর। দার্জিলিংয়ের জেলা শাসক প্রীতি গোয়েলকে এই বিষয়ে ফোন এবং মেসেজ করা হলে তিনি কোনও সাড়া দেননি। সোশ্যাল অডিটের দার্জিলিং জেলার নোডাল অফিসার মৌসুমি পাত্রও ব্যস্ত থাকার অজুহাত দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এদিকে, এভাবে ফান্ডের দোহাই দিয়ে সোশ্যাল অডিট আটকে রাখায় প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিজেপি। নকশালবাড়ি মাটিগাড়ার বিধায়ক আনন্দময় বর্মন জানান, অডিট করলেই আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে। দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার এবং তার আধিকারিকদের মুখোশ খুলে যাবে। তাঁর কটাক্ষ, ‘ফান্ডের অভাব দেখিয়ে তাই রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের অডিট আটকে রেখেছে। এই সরকারের বেশিদিন নেই।’ তাঁরা ক্ষমতায় এলে পুনরায় সমস্ত অডিট করিয়ে দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলে ঢোকানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।