উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দলীয় প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন কার্সিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। তিনি রাজু বিস্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছেন নির্দল প্রার্থী হয়ে। ওই ঘটনায় ‘অস্বস্তিতে’ পড়েছে কেন্দ্রের শাসকদল। কিন্তু ভোটপর্ব মেটার আগে দলের ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না তারা।
কার্সিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়কের বরাবরেরই অপছন্দের দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ রাজু বিস্ট। রাজু এবারও প্রার্থী হওয়ায় দলের প্রতি বিদ্রোহ ঘোষণা করে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন বিষ্ণু। বিজেপি বিধায়কের এহেন সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব না দিলেও ভালো চোখে নেয়নি কেন্দ্রের শাসকদল। ভোটের আগে বিষ্ণুর বিরুদ্ধে বিজেপি কোনও পদক্ষেপ নেবে না তা একপ্রকার নিশ্চিত। যদিও বিজেপির একাংশের দাবি, ভোটপর্ব মিটে গেলে বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মনস্থির করেছেন বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। কিন্তু দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আপাতত সাবধানী বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বিষ্ণুপ্রসাদ যেসব দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন, তা ফেলে দেওয়ার মতো নয়। তাই ভোটপর্ব শেষ হওয়ার আগে বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না বলেই বিজেপি সূত্রে খবর। দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, ভোটের আগে বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিলে পাহাড়ের মানুষের কাছে ‘ভুল বার্তা’ যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দার্জিলিংয়ের ভোটারদের সহানুভূতি পেতে পারেন ‘বিদ্রোহী’ বিষ্ণুপ্রসাদ। এর ফলে ভোট কাটাকাটি হলে সমস্যায় পড়তে হতেও পারে রাজু বিস্টকে। সে কারণেই বিষ্ণুপ্রসাদকে নিয়ে আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে গেরুয়া শিবির।
পাহাড়ের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদের বক্তব্য, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের আশ্বাস দিয়ে ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিনবার দার্জিলিং আসনে গোর্খাদের সমর্থন নিয়ে জিতে এসেছে বিজেপি। প্রতিবারই ‘বহিরাগত’ প্রার্থীদের সাংসদ হিসাবে পাচ্ছেন পাহাড়বাসী। কখনও যশবন্ত সিংহ, কখনও সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, কখনও রাজু বিস্টকে টিকিট দিয়ে দার্জিলিং থেকে সংসদের সদস্য করেছে বিজেপি। প্রাধান্য দেওয়া হয়নি পাহাড়ের ভূমিপুত্রকে।
পাহাড়ের মানুষের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি দীর্ঘদিনের। এই দাবিকে সামনে রেখেই নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিষ্ণু। তিনি বলেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে পৃথক গোর্খাল্যান্ড দেওয়ার আশ্বাস দিয়েই ভোটে দাঁড় করানো হয়েছিল। কিন্তু তিন বছর কেটে গেলেও সেই দাবি নিয়ে বিজেপি কোনও উচ্চবাচ্য করছে না। তাই এবার গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়েই দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছি ভোট চাইতে। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নিতে চাইছে না বিজেপি। ‘সেফটি পিন’ প্রতীক নিয়ে এবার ভোটে লড়াই করবেন বিষ্ণুপ্রসাদ।