শিলিগুড়িঃ তখন ঘড়ির কাঁটায় ২ বেজে ৫৫ মিনিট। দেবের আসার কথা শুনে এক কথায় তখন দেব ভক্তদের ভিড় সামলাতে পুলিশকে হিমসিম খেতে হচ্ছে। নিজের গাড়ি থেকে নেমে দেব যখন তৃণমূল প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়ের সমর্থনে প্রচারের জন্য হুড খোলা চারচাকার গাড়িতে গিয়ে দাঁড়ালেন, তখন চারিদিক থেকে উচ্ছ্বাসে শতাধিক মানুষের চিৎকার। সঙ্গে দেবের ছবি মুঠো ফোনের ক্যামেরা বন্দি করতে ব্যস্ত সাধারণ মানুষ।
এক ঘন্টা রোড শোটি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নৌকাঘাট থেকে শীতলাপাড়া হয়ে শক্তিগড় মাঠের দিক যত এগিয়েছে মানুষের ভিড় ততই বেড়েছে। শীতলাপাড়ায় সবিতা রায় নামে এক তরুণী দেবের হাতে একটি ফুলের স্তবক তুলে দেন। দেবকে দেখতে যেখানে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ উৎফুল্ল ছিল, সেখানে ৩২ থেকে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে ছিল হতাশা। কেননা পাঁচটি ওয়ার্ড ঘোরার কথা থাকলেও ৩১ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরেই ঘাটালের সাংসদ দেব এদিন কলকাতা ফিরতে বাগডোগরা বিমান বন্দরের পথ ধরেন।
এদিন ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তাপস চট্টোপাধ্যায় ফুল দিয়ে দেবকে রাস্তার ওপর সম্বর্ধনাও জানান। কিন্তু ওয়ার্ডের প্রবেশের সীমানাতে দেব হুড খোলা গাড়ি থেকে নেমে অন্য একটি চারচাকার গাড়িতে করে বাগডোগরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। যা নিয়ে বাকি ওয়ার্ডে তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে।
৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘২০ মিনিট করে প্রতিটি ওয়ার্ডে দেবকে ঘোরানোর কথা ছিল। সেখানে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নেতৃত্ব দেবকে এক ঘন্টার বেশী সময় ওয়ার্ডে ঘুরিয়েছে। বহু মানুষ অপেক্ষা করেও দেবকে দেখতে পেল না। যা ওয়ার্ডের মানুষ ভাল ভাবে নেননি। দেব এলাকায় আসুক সেটাই চাই।’
৩২ নম্বর ওয়ার্ডে দেবকে কাছ থেকে দেখার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন বছর ৭৮-এর কুসুম সিংহ। তিনি বলেন, ‘দেবের অনেক সিনেমা দেখেছি। তাঁর নাচ আমার ভাল লাগে। অন্য দিন যখন দেব আসবে তখন যাতে সবাই আমাকে ডাকে।’
দেবের রোডশোটি শক্তিগড়, বলাকা মোড়, গেটবাজার, বাল্মিকী স্কুল, সারদা স্কুলের সামনে দিয়ে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে নেতাজী মোড়ের সামনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল নেতা জয়দীপ নন্দীর কথায়, ‘৩১ নম্বর ওয়ার্ডে অনেকটা সময় দেবকে ঘোরানো হয়েছে। একদিকে গরম, তারওপর বিমানের সময় হয়ে যাওয়ায় দেব ফিরে যায়। যাঁরা দেবকে না দেখতে পেয়ে হতাশ হয়েছেন, তাঁদের বুঝিয়ে বলা হয়েছে।’
এদিন প্রচারে দেবের সঙ্গে ছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। দলীয় নেতা কাউন্সিলরদের ক্ষোভের কথা গৌতম দেবের কাছেও পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ‘তারকাদের নিয়ে আসলে এমন অল্প বিস্তর ঝঞ্ঝাট তৈরি হয়। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে অলিগলিতে দেবকে এতটা সময় ঘুরিয়ে ফেলা হয় যে বাকি ওয়ার্ড ঘোরার তিনি সময় পাননি।’