শিলিগুড়ি: মদ্যপ অবস্থায় জিআরপি এএসআই-এর বেলেল্লাপনায় চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়ির পশু হাসপাতালের সামনে। মঙ্গলবার রাতে ওই এএসআই নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই হাসপাতালে ঢুকতে যান। অভিযোগ, গেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা মেরে ওই এএসআই দরজা খোলার চেষ্টা শুরু করেন। যদিও হঠাৎ করে তিনি পশু হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে যাচ্ছেন কেন? সে ব্যাপারে ওই নিরাপত্তারক্ষী জানতে চাইলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরমধ্যে গেটও খুলে যাওয়ায় ধস্তাধস্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, রাস্তায় পড়ে মাথা ফেটে যায় ওই এএসআই-এর। এরমধ্যেই পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। ওই এএসআই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকলে তাঁকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের কর্তাদের অভিযোগ, ধস্তাধস্তির সময় তাঁদের নিরাপত্তারক্ষীকে ঘুসিও মেরেছেন ওই এএসআই।
কর্পোরেশনের উত্তরবঙ্গ সেলস ম্যানেজার ডঃ সুজিত নেওয়ার গোটা ঘটনায় অবাক। তাঁর বক্তব্য, ‘পশু হাসপাতালের পাশাপাশি ওয়েস্ট বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের অফিসও এখানে রয়েছে। তাই গোটা এলাকাটাই বিধিনিষেধযুক্ত এলাকা। তাছাড়া রাতের ওই সময়টায় গোটা চত্বরে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কেউ থাকেন না।’ তাহলে মদ্যপ অবস্থায় ওই এএসআই সেখানে ঢুকতে যাচ্ছিলেন কেন? প্রশ্ন কর্পোরেশনের উত্তরবঙ্গ সেলস ম্যানেজারের। ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের না হলেও বিষয়টি কানে গিয়েছে রেল পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগানের। তাঁর বক্তব্য, ‘গোটা বিষয়টাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কর্পোরেশন চাইলে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে পারে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ ওই এএসআই গেটের সামনে হঠাৎ করেই চলে আসেন। জিআরপি’র হেডকোয়ার্টারেই তাঁর পোস্টিং থাকায় ওই রাস্তায় তাঁর যাওয়া-আসা রয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি চলাকালীন এলাকার পথচলতি মানুষজনও সেখানে দাঁড়িয়ে পড়েন। এমনকি মদ্যপ অবস্থায় ওই এএসআই-এর এধরনের কার্যকলাপের প্রতিবাদও করতে শুরু করেন এক মহিলা। ওই মহিলাকেও ওই এএসআই-এর গালিগালাজ করতে থাকার ভিডিও সামনে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে আসা পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশও ওই মহিলাকে গালিগালাজ করতে দেখে ওই এএসআইকে বলতে বাধ্য হয়েছে, ‘আপনি এত গালিগালাজ করছেন কেন? গাড়িতে উঠে বসুন।‘ প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, ‘একজন এএসআই-এর আচরণ যদি এমন থাকে, তাহলে কিছু বলার নেই।‘