নাগরাকাটাঃ ফের জরুরীকালীন ব্রেক কষে রেল লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা হাতিকে সুরক্ষিতভাবে জঙ্গলে ঢোকার পথ প্রশস্ত করে দিল ট্রেন চালক। এবারের ঘটনাটি মঙ্গলবার গভীর রাতে সেবক ও গুলমা স্টেশনের মাঝে ২৬/১-০ নম্বর পিলারের কাছে। ওই রেলপথটি মহানন্দা অভয়ারণ্যর মাঝের। দলগাঁও স্টেশন থেকে শিলিগুড়ির দিকে যাওয়া ডলোমাইট বোঝাই একটি মালগাড়ির লোকো পাইলট রাহুল বিশ্বাস ও অ্যাসিট্যান্ট লোকো পাইলট মুকেশ কুমার হঠাৎই একটি বিরাট হাতিকে রেল লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ট্রেন থামিয়ে দেন। এই নিয়ে গত ১ মাসের ব্যবধানে আনুমানিক ২৫ বার এভাবে হাতি রক্ষা সম্ভব হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। চলতি মাসে এখনও পর্যন্ত পাঁচ বার এমন ঘটনার খবর মিলেছে।
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০ মিনিটের ব্যবধানে পরপর দুটি ঘটনা ঘটে চালসা ও নাগরাকাটা স্টেশনের মাঝে চাপরামারির জঙ্গল চেরা রেল পথে। সেদিন প্রথমে সকাল ৬ টা বেজে ২২ মিনিটে আপ লাইট ইঞ্জিন এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন ৭০/৯ নম্বর পিলারের কাছে রেল লাইনের ওপর হাতি দেখে দাঁড়িয়ে যায়। এরপর ওই স্থানেরই ৭১/০ নম্বর পিলারের কাছে শিলিগুড়ি থেকে ধুবুড়িগামী যাত্রীবাহী ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে লাইনের ওপর হাতি চলে আসার কারণে। লোকো পাইলটরা সঠিক সময়ে জরুরীকালীন ব্রেক কষে ট্রেন থামিয়ে দেন। তার আগে ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর পরপর দু দিন মংপং এর জঙ্গল চেরা রেল লাইনে জরুরীকালীন ব্রেক কষে দাড় করিয়ে দেওয়া হয় একটি হাতিকে বাঁচানোর কারণে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার অমরজিত গৌতম বলেন, ‘বুনোদের রক্ষায় আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। জঙ্গলের পথে নিয়ন্ত্রিত গতিবেগের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ট্রেন চালকদের এব্যাপারে সতেচন রাখার প্রক্রিয়া জারি আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে।’ রেল সূত্রেই জানা গেছে গত এক মাসে কখনও চাপরামারি আবার কখনো মহানন্দা, মংপং, জলদাপাড়ার জঙ্গলের রেল পথে ট্রেন থামিয়ে হাতি রক্ষার একের পর এক ঘটনাগুলি ঘটেছে। রেলের এই সতর্কতাকে স্বাগত জানাচ্ছে সব মহলই।
উল্লেখ্য ৯ অগাস্ট গভীর রাতে চাপরামারির জঙ্গল পথে মালগাড়ির ধাক্কায় একটি গর্ভবতী হস্তিনীর মৃত্যু হয়। এরপর রেলের পক্ষ থেকে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়। সম্প্রতি রেল ও বন দপ্তরের রাজ্য স্তরের কো-অর্ডিনেশন কমিটির একটি বৈঠকও হয়। সেখানে এক গুচ্ছ প্রস্তাব উঠে আসে। ডুয়ার্সের জঙ্গলচেরা পুরো রেলপথেই হাতির আনাগোনা আগাম বোঝার জন্য সেন্সর নির্ভর ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন বন কর্তারা।