বাগডোগরাঃ আশংকাই সত্যি হল। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টা নাগাদ জংলিবাবার মন্দির থেকে পুজো দিয়ে ফেরার পথে তিনবাত্তি মোড় এলাকায় রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে পড়ে দুটি বিশালাকার হাতি। হাতির কারণে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে সারিসারি পুণ্যার্থীদের গাড়ি। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গাড়ির ভিতরে থাকা পুণ্যার্থীরা। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বনবিভাগের এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের কর্মীরা। কিছুক্ষণের প্রচেষ্টায় হাতি দুটিকে জঙ্গলে ফেরায়। হাতিদুটি জঙ্গলে চলে যেতেই আতঙ্ক দূর হয় পুণ্যার্থীদের।
বাগডোগরা রেঞ্জের আধিকারিক সোনম ভুটিয়া এদিন বলেন, জংলিবাবার মন্দির সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভিতরে। ফলে এখানে হাতির আগমন নিত্য দিনের ঘটনা। শিবরাত্রিতে প্রতিবছরই হাজার হাজার লোকের সমাগম হয় জংলিবাবার মন্দিরে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আগে থেকেই বনদপ্তরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বিকেলের আগেই পুণ্যার্থীদের মন্দির থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুজো দিয়ে পুণ্যার্থীদের মন্দির ছাড়তে দেরি হয়। এদিন দুটো হাতি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসলেও বনকর্মীরা সতর্ক থাকায় বিপদ ঘটেনি। সোনমের কথায় এখনও বনের মধ্যে জংলিবাবা মন্দির এলাকায় জঙ্গলে প্রায় ৬০ টি হাতি ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। এজন্য আমরা সব রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম।
এদিন জংলিবাবার মন্দিরে গিয়ে দেখা গেল প্রচুর মানুষের ঢল নেমেছে। মন্দির চত্বরে উচ্চস্বরে মাইকে নাম কীর্তন চলছে। সংরক্ষিত বনের গভীরে মাইক বাজানো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও রেঞ্জার বলেন, মাইকের শব্দ কম ছিল। এলিফ্যান্ট স্কোয়াড এর এক আধিকারিক মানসকান্তি ঘোষ বলেন, “মন্দিরে প্রবেশ পথের গেট ৪.১৫ মিনিটে বন্ধ করে দেওয়া হয়। যারা ভিতরে পুজো দিতে এসেছিলেন তাদেরকে ৪.৪৫ এর মধ্যে পুজো দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমরা আরও আগে ফিরে যেতে বলেছিলাম। আসলে অনেকেই দূর থেকে আসেন। পুজো দিতে না পারলে মন খারাপ হবে। কারও সেন্টিমেন্টে আঘাত করা ঠিক নয়।”
জানা গিয়েছে আজকে যত মানুষের সমাগম হয়েছে শনিবার এর চেয়ে বেশি মানুষের সমাগম হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এজন্য বন বিভাগ এবং পুলিশের তরফ থেকে সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বনদপ্তরের ৯টি টিম থাকবে মন্দির চত্বরে। পানিঘাটা, ঘোষপুকুর, টুকুরিয়া, বাগডোগরা রেঞ্জের রেঞ্জার সহ ৫০ জন বনকর্মী হাতির ওপর নজরদারি চালাবেন। মন্দির লাগোয়া জঙ্গলপথে হেঁটে বা সাইকেলে যাতায়াত করতে দেওয়া যাবে না। বনের মধ্যে মেলা করতে দেওয়া হবে না বলেও ফতোয়া জারি করেছে বনদপ্তর।