উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ‘১০ হাজার পাউন্ড দিলেই পাওয়া যাবে বাবা, সন্তান হবে ব্রিটিশ নাগরিক’, বিবিসির তদন্ত মূল প্রতিবেদনে ব্রিটেনে এমনই চক্রের পর্দা ফাঁস করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ব্রিটিশ পুরুষরা প্রবাসী মহিলাদের সন্তানের বাবা হওয়ার বিনিময়ে হাজার হাজার পাউন্ড টাকা নিচ্ছেন। জন্ম সংশাপত্রে এসব পুরুষের নাম যুক্ত করার জন্য তাদের ১০,০০০ পাউন্ড অফার করা হচ্ছে। এভাবে প্রবাসী শিশুদের ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পেতে এবং প্রবাসী মায়েদের সে দেশের নাগরিকত্বের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ কোনও ব্রিটিশ নাগরিক, যার নাম বসে যাবে প্রবাসী মহিলার সন্তানের জন্ম শংসাপত্রে। ফলে, আইনসম্মতভাবে তার স্ত্রী হওয়ার সুবাদে নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে যাবে বহিরাগত সেই মহিলারা।
তদন্তে জানা গিয়েছে, জালিয়াতরা এই কাজে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করছে এবং তারা দাবি করছে যে হাজার হাজার মহিলাকে তারা এভাবে সাহায্য করেছে। ব্রিটেনজুড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে এসব জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন এজেন্টরা একাজে জড়িত রয়েছে এবং এরা টাকার বিনিময়ে ভুয়ো বাবা সাজাতে ব্রিটিশ পুরুষদের জোগাড়ের দায়িত্ব নিচ্ছে এরাই। বিবিসির একজন গবেষক গর্ভবতী মহিলার বেশ ধরে এই জালিয়াতি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এমন কিছু লোকের সঙ্গে কথা বলেছেন। দেখা যাচ্ছে, সেই ‘এজেন্ট’ রীতিমতো আশ্বস্ত করছেন, ‘কোনও চিন্তা নেই, কাজ হয়ে যাবে’। তিনি সেই প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপ করালেন ‘অ্যান্ড্রু’ নামের যুবকের। তিনি ‘বাবা’ সাজার কাজ করেন। এর জন্য তিনি ১১,০০০ পাউন্ডের একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ অফার করেন। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে পুরো কাজটা ‘অতি সহজে’ হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়ে এজেন্ট জানান, শিশুটি যাতে ব্রিটিশ পাসপোর্ট পায় তার জন্য তিনি সবকিছুই করবেন।
এদিকে ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী কোনও মহিলা যদি বেআইনিভাবে বিলেতে প্রবেশ করেন এবং কোনও ব্রিটিশ নাগরিকের সঙ্গে সন্তানের জন্ম দেন, তাহলে সেই সন্তান ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পাবে। সেই সূত্র ধরে মা ‘পরিবার ভিসা’-র জন্য আবেদন করতে পারেন। যার ফলে তিনি ব্রিটেনে থাকতে পারবেন এবং সময় হলে নাগরিকত্বের জন্যও আবেদন করতে পারবেন। কার্যত এই আইনের জেরেই একের পর এক অভিবাসীরা সমাজমাধ্যমের দ্বারা বা এজেন্টের মাধ্যমে এই চক্রের খোঁজ চালাচ্ছেন। যার দরও লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে আইনি জটিলতায় ফেঁসে যাচ্ছে প্রশাসন।