প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: গত চার বছরে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং তাঁর স্ত্রী কোয়েকো সোমেকাওয়া জয়শংকরের মোট সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ২৯.৪ শতাংশ, যা শুনে চোখ কপালে উঠেছে অনেকের। এর মধ্যে সংযোজিত হয়েছে দিল্লির বসন্ত বিহারে একটি নতুন ফ্ল্যাট অধিগ্রহণ। এছাড়া ইউরোপ তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে অগাধ সম্পত্তি। সম্প্রতি মেয়াদ ফুরোনোর আগেই রাজ্যসভা নির্বাচনে গুজরাট থেকে সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা পড়া তাঁর হলফনামা থেকে পাওয়া গিয়েছে এই তথ্য।
জানা গিয়েছে, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামাতে বিদেশমন্ত্রী তাঁর ২০.০৯ কোটি টাকার সম্পত্তির ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে দিল্লির দু’টি ফ্ল্যাট, এবং সিমলায় ১.৫ একরের একটি কৃষি জমিও। এর আগে ২০১৯ সালে জমা দেওয়া হলফনামায় জয়শংকর তাঁর ১৫.৫২ কোটি টাকার ব্যক্তিগত সম্পত্তির উল্লেখ করেন। কিন্তু গত চার বছরে তা কোন উচ্চতায় পৌঁছেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এও জানা গিয়েছে, জয়শংকরের স্ত্রীর ১.১২ লক্ষ টাকার জিএসটি বকেয়া রয়েছে। জয়শংকরের স্ত্রী কোয়োকো সোমেকাওয়া দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং জিএমআর হায়দরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। বিদেশেও ধনসম্পত্তি রয়েছে তাঁর৷ ওয়াশিংটন ডিসি ও টোকিওর ব্যাংকের আমানত রয়েছে জয়শংকরের স্ত্রীর। হলফনামায় দেখা গিয়েছে জয়শংকর ও তাঁর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঋণের পরিমাণ কমেছে আগের থেকে। ২০১৯ সালে যা ছিল ৫.২৫ কোটি টাকা, চলতি বছরে তা দাঁড়িয়েছে ১৮.৪৮ লাখ টাকায়। মন্ত্রীর হাতে নগদের পরিমাণও কমেছে আগের থেকে। বর্তমানে মন্ত্রীর হাতে নগদ রয়েছে ৮০ হাজার টাকা। চার বছর আগে যা ছিল ১.২ লক্ষ টাকা। তবে স্থাবর, অস্থাবর উভয় সম্পত্তির পরিমাণও বেড়েছে বিদেশমন্ত্রীর।
প্রসঙ্গত, মোদি জমানার সূচনালগ্নে কেন্দ্রীয় বিদেশ সচিবের ভূমিকায় কাজ করার সময়ই খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেকনজরে পড়েছিলেন দেশের প্রথমসারি দক্ষ কূটনীতিবিদ ড. সুব্রহ্মনিয়ম জয়শংকর। ২০১৯-এ দ্বিতীয় বার শাহি মসনদে ক্ষমতা দখল হলে এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের প্রয়াণের পর তাঁর সুযোগ্য ডেপুটি এস জয়শংকরের হাতে বিদেশমন্ত্রকের রাজপাট তুলে দেন মোদি। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাননি জয়শংকর। কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রীর ভূমিকায় নিজ দক্ষতা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে অগাধ পাণ্ডিত্য, কূটনীতিক হিসেবে পারদর্শিতা প্রদর্শন করে ক্রমশ প্রধান কেন্দ্রীয় বলয়ের মধ্যাঞ্চলে চলে আসেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতের বৈদেশিক নীতি এক অন্যমাত্রা পায়। কিন্তু সেই জয়শংকরের এহেন বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে জল্লনা শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে, এমনকি কেন্দ্রীয় পরিসরেও। জয়শংকরের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে পরোক্ষে সমালোচনা শুরু হয়েছে নেটনাগরিক মঞ্চেও৷ এ বিষয়ে যদিও কোনও মন্তব্য করেননি কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী।