শিলিগুড়ি: দার্জিলিংয়ে ষষ্ঠ তপশিল লাগু করার দাবি নিয়ে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করলেন জিএনএলএফের সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্র ছেত্রী। দুজনের মধ্যে দিল্লিতে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়। জানা গেছে, বৈঠকে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরিও। জিএনএলএফের তরফে রাহুল গান্ধীর হাতে স্মারকলিপি তুলে দিয়ে দাবি করা হয়েছে, ষষ্ঠ তপশিল বিল যেটা ২০০৫ সালে সংসদে পেশ করা হয়েছিল সেটাকে পাশ করানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, বিলটিকে ২০০৫ সালে লোকসভায় পেশ করে সংসদের স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। রাহুল গান্ধী ফের এই বিল নিয়ে লোকসভায় সক্রিয় হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। জিটিএ-র সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জিএনএলএফের প্রয়াত সুপ্রিমো সুবাস ঘিসিং যে মামলা দায়ের করেন তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মহেন্দ্র ছেত্রী জানিয়েছেন, একমাত্র কংগ্রেস দলই পাহাড়ের জন্য কিছু করেছে। রাহুল গান্ধী বিষয়টি নিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি করেন ছেত্রী। তবে মহেন্দ্র ছেত্রী এখন দলের কোনও দায়িত্বে নেই বলে দাবি করেছেন দার্জিলিংয়ের জিএনএলএফ নেতা তথা বিধায়ক নীরজ জিম্বা। উনি জানান, দীর্ঘদিন দলের কর্মসূচির সঙ্গে কোনও যোগ নেই মহেন্দ্র ছেত্রীর। ওনার অবস্থান জিএনএলএফের অবস্থান নয়।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে থেকেও জিএনএলএফ নেতার এই বৈঠকে যোগ দেওয়াকে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। জিএনএলএফ বরাবর ষষ্ঠ তপশিলের পক্ষে। অতীতে দলের সুপ্রিমো সুবাস ঘিসিং থেকে শুরু করে দলের বর্তমান নেতৃত্বও ষষ্ঠ তপশিল নিয়েই বেশি আগ্রহী। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিজেপিকে সমর্থন করলেও কাজে তাঁরা বাস্তবসম্মত নয় তা এর আগেও একাধিক বার বলেছেন মহেন্দ্র ছেত্রীরা। কিন্তু বিজেপি বারবার পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় মোর্চার মতোই জিএনএলএফও বিজেপিকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু বাস্তবে বিজেপি কোন কাজ না করায় অবশেষে আবার কংগ্রেসের দরজায় জিএনএলএফ নেতারা। মনে রাখা দরকার,২০০৫ সালে কেন্দ্রের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার এবং রাজ্যের বাম সরকারের মধ্যস্থতায় পাহাড়কে ষষ্ঠ তপশিলের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়ে ফেলেছিলেন সুভাষ ঘিসিং। কিন্তু বিমল গুরুংরা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা গঠন করে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড় জুড়ে আন্দোলন শুরু করে। সেই সময়ই ষষ্ঠ তপশিলের সমস্ত প্রক্রিয়া হিমঘরে ঢুকে যায়।