শুভদীপ শর্মা ও অর্ঘ্য বিশ্বাস, ময়নাগুড়ি: একদিকে পূর্ণিমার চাঁদের আলো। অন্যদিকে ভারত–নেপাল সীমান্তের নেপালে হাতি মেরে তার দাঁত কেটে নিয়ে গিয়েছে চোরাশিকারিরা (Poacher)। এর জেরেই গরুমারা (Gorumara), জলদাপাড়া (Jaldapara) সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট (High Alert in Jungle)। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা উত্তরের জঙ্গলকে। দিনরাতের বিশেষ নজরদারি চলছে বিভিন্ন এলাকাজুড়ে। জঙ্গলে প্রবেশের বিভিন্ন পথে পুলিশের সাহায্যে চলছে নাকা চেকিং। বিভিন্ন রিসর্টে থাকা পর্যটকদের তালিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গরুমারার ভিতরে নজরদারিতে কুনকি হাতির পাশাপাশি গরুমারার প্রশিক্ষিত কুকুর অরল্যান্ডোর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। বন দপ্তর সূত্রে খবর, দিনদশেক আগে, কার্সিয়াং ডিভিশনের কাছে নেপাল সীমানার মধ্যে একটি দাঁতালের মৃতদেহ উদ্ধার করে নেপালের বন দপ্তর। ওই হাতিটির দাঁত কেটে নিয়ে যায় চোরাশিকারিরা। উত্তরবঙ্গ লাগোয়া প্রতিবেশী দেশ নেপালের এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন উত্তরবঙ্গের বন দপ্তর। উত্তরবঙ্গে এধরনের ঘটনা আটকাতে ইতিমধ্যেই হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে গরুমারা জলদাপাড়া সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বনাঞ্চলে। জঙ্গলে প্রবেশ ও বের হওয়ার বিভিন্ন রাস্তায় চলছে নাকা চেকিং। বিভিন্ন বনাঞ্চলে আনাচে-কানাচে দিনের ২৪ ঘণ্টা জোরদার নজরদারি চলছে। নজরদারিতে বেশি সংখক কুনকি হাতির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। যাতে হেঁটে যে সমস্ত এলাকায় বনকর্মীরা যেতে পারেন না সেখানেও নজরদারি চালানো যায়। এই বিষয়ে বন দপ্তরের নীচু থেকে উঁচু সর্বস্তরের বনকর্মীদের নিয়ে এই বিষয়ে বৈঠক করে কর্মীদের সতর্কও করে দেওয়া হয়েছে। সাহায্য চাওয়া হয়েছে রিসর্ট ব্যবসায়ীদেরও।
বন দপ্তর সূত্রে খবর, চোরাকারবারিরা কিছুটা বাড়তি সুবিধা পেয়েছে পূর্ণিমার জন্য। মঙ্গলবার পূর্ণিমা আর এই সময় জঙ্গলের আনাচে-কানাচে পরিষ্কার দেখা যায়। সেই সুযোগে চোরাশিকারিরা আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রতি পূর্ণিমার পাশাপাশি এই পূর্ণিমাতেও বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে বন দপ্তর। উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণী বিভাগের বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, ‘নিরাপত্তার কোনওরকম খামতি রাখা হচ্ছে না। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই বন দপ্তরের কাছে খবর দেওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে সর্বস্তরের মানুষের কাছে।’ গরুমারা জঙ্গলের শেষ প্রান্তে জলঢাকা নদীর জির বাঁধ এবং রামশাই জলঢাকার চর। ২০১৭ সালে গরুমারার জোড়া গন্ডার খুনের সময় এই পথকেই ব্যবহার করেছিল চোরাকারবারিরা বলে বন দপ্তরের তদন্তে উঠে এসেছিল। এবার সে দিকেও চলছে ২৪ ঘণ্টার বিশেষ নজরদারি রয়েছে বলে বন দপ্তর সূত্রে খবর।